শেরপুরের অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমন পিয়াসীদের পদভারে মুখরিত

ঝিনাইগাতী সংবাদদাতা : অবকাশ পর্যটন কেন্দ্র সহ শেরপুরের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ভ্রমনপিয়াসীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে। শেরপুরের জনপ্রিয় পর্যটক কেন্দ্র গজনি অবকাশ। ১৯৯৩ সালে তৎকালীন শেরপুরের জেলা প্রশাসক গজনীর গহিন জঙ্গলের এই পাহাড়ি চূড়ায় গজনী অবকাশ কেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে শেরপুর জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত অবকাশ কেন্দ্রের ব্যাপক প্্রচার ও উন্নয়ন কাজ এখনও অব্যাহত রয়েছে। শেরপুর জেলা সদর থেকে অবকাশ কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। গাড়ি করে অবকাশ কেন্দ্রে পৌঁছাতে সময় লাগে বড়জোর ৪৫ মিনিট। যানজটমুক্ত যাতায়াতের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়ে পুরোটাই পাকা রাস্তা। ঢাকা থেকে মাত্র সাড়ে ৪ ঘণ্টায় যাওয়া যাবে অবকাশ কেন্দ্রে। শীতকালীন মৌসুমে লাখো ভ্রমণপিপাসুর পদভারে মুখরিত হয় অবকাশ কেন্দ্র। অবকাশ কেন্দ্রের বিভিন্ন স্পটে দর্শনার্থীদের জন্য নান্দনিক কারুকাজ ও শৈল্পিকতার স্পর্শে নির্মিত হয়েছে বন্যহাতী, ডাইনোসর, জিরাপ, হরিণ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, মুক্তিযুদ্বের স্মৃতিসৌধ, মৎস্য কুমারী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতি, দৃষ্টিনন্দন পদ্মশিরি, গারো মা ভিলেজ, মাটির নিচে সুড়ঙ্গেপথে পাতাল পুরীতে ভ্রমণ করা সহ নতুন করে ঝুলন্ত ব্রিজ, জিপলাইনিং, মুক্তিযোদ্ধা যাদুঘর ইত্যাদি ভ্রমনপিপাসুদের মন আকৃষ্ট করবে।এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ভাস্কর্য। পাহড়ের মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার জন্য পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত হয়েছে সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। পাহাড়ের নিচ থেকে টাওয়ারের উচ্চতা প্রায় ১৬৫ ফুট। টাওয়ারে উঠলে দেখা যাবে বাংলাদেশ ও ভারতের মেঘালয় প্রদেশের রাশি রাশি পর্বত মালাসহ বৃস্তৃত্ব সবুজ বনভূমির ছোট বড় পাহাড়ি টিলা। দৃষ্টি-চক্ষুর বাইরে টাওয়ারে রক্ষিত ৬টি বাইনোকুলার দিয়ে দেখা যাবে দূর-দৃষ্টির দৃশ্য। গারো মা ভিলেজে গিয়ে ভাস্কর্যে দেখা যাবে কিভাবে গারো মায়েরা পিঠের কোলে তার সন্তানকে কাপড়ে বেঁধে শিশুদের লালন পালন করে। এ ছাড়াও সেখানে রয়েছে ভাস্কর্য ও কফি হাউস।এখানে চিত্তবিনোদনের পাশাপাশি মুসল্লিদের জন্য মসজিদে নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে শিশুদের জন্য রয়েছে, চুকুলিপি চিলড্রেন পার্ক। পার্কে রয়েছে গজনী এক্সপ্রেস ট্রেন, নাগর দোলা, মেরী গো রাউন্ড ইত্যাদি খেলনার উপকরণ। অবকাশ কেন্দ্রে আসা আগতদের পানি সরবরাহের জন্য রয়েছে কয়েকটি রিং ওয়েল ও একটি গভীর নলকূপ। অবকাশ কেন্দ্রের ৩ তলা ভবনের ৮টি গেস্টরুমে আগত অতিথিদের জন্য সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভাড়া দেয়া হয়। এখানকার পাহাড়ি ঝর্ণাকে কৃত্রিম লেকে পরিণত করা হয়েছে। শেরপুরের পর্যটক কেন্দ্রগুলো কাছাকাছি হওয়ায় এক সাথে সব পর্যটক কেন্দ্রে ঘুরে মনকে সতেজ রাখা যায়। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল জানান ভ্রমনপিপাসুদের নিরাপত্তা জোরদার সহ গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রকে নতুন করে সৌন্দর্যর কাজ করা হয়েছে । বর্তমানে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান মহোদয়ের নির্দেশে আরো সৌন্দর্য করার জন্যে কাজ করা হবে বলে জানান।