শেরপুরে জনবলের অভাবে চালু করা যাচ্ছে না আইসিইউ ও সিসিইউ ইউনিট

শেরপুর সংবাদদাতা : সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেও শুধুমাত্র জনবলের অভাবে চালু করা যাচ্ছে না আইসিইউ এবং সিসিইউ ইউনিট। অযন্ত অবহেলায় পড়ে থাকতে থাকতে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকা মুল্যের যন্ত্রপাতি। তাতে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শেরপুর জেলার ২০ লাখ মানুষ।
জানা গেছে, করোনাকালীন সময়ে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের ৮ তলা ভবনের উপরে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আইসিইউ ও একটি সিসিইউ ইউনিট ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ২ কোটির বেশি টাকা ব্যায়ে আইসিইউ ও সিসিইউ ইউনিটের জন্য ভেন্টিলেটর, ১০টি করে দুই ইউনিটের জন্য ২০টি বেড সহ সকল প্রকার যন্ত্রপাতি দিয়ে শেরপুর জেলা হাসপাতালের আইসিইউ ও সিসিইউ সাজানো হলেও কেবলমাত্র জনবলের অভাবে তা চালু করা যাচ্ছে না। এ যেন ঘোরার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার মতো অবস্থা।
হাসপাতালের আইসিইউ ও সিসিইউ ইউনিট ঘুরে দেখা যায়, বাইরে থেকে ধুলো বালি গিয়ে ইউনিটের ভেন্টিলেটর, শয্যাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিটের ভবনের বাথরুম সহ বিভিন্ন দরজা জানালা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
নাগরিক প্ল্যাটফর্ম “জন উদ্যোগ” এর আহব্বায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, এই ইউনিটটি চালু না হওয়ায় নেশা খোরদের আড্ডা খানায় পরিনত হয়েছে এবং তারা ভবনের ভেতরের অনেক গুরুত্বপৃর্ন যন্ত্রপাতি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। তাই হাসপাতালে এই আই সি ইউ ইউনিট দুটি দ্রুত চালু করার জন্য জেলার সচেতন মহল জোর দাবি জানিয়েছেন।
সূত্রে আরও জানা গেছে, স্বাস্থ্য সেবার দিক দিয়ে ভৌগোলিক কারণে দেশের মধ্য উত্তর সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জেলার ৫টি উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার দুইটি এবং কুড়িগ্রাম জেলার আরো দুইটি উপজেলা সহ মোট ৯টি উপজেলার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে থাকেন এই শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সুত্রে জানা যায়, হাসপাতালটি ২০১৮ সালে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতাল হিসেবে উন্নীত করা হয়। কিন্তু ২৫০ শয্যা হলেও ডাক্তার নার্সসহ অন্যান্য লোকবল রয়েছে সেই ১০০ শয্যারই। নতুন করে আইসিইউ ও সিসিইউ ইউনিট চালু করতে হলে কনসালটেন্ট ৬জন, মেডিকেল অফিসার ১২জন, নার্স ৩০জন,ওয়ার্ডবয় ১২জন, স্ট্রেচারবেয়ারার ৬জন, ল্যাব টেকনিশিয়ান ৩জন, আইসিইউ টেকনিশিয়ান ২জন, সুইপার ৬জন প্রয়োজন।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, জনবল না থাকায় এই ইউনিট দুটি আজও চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রায় ২০ লাখ লোকের সে আশা গুড়োবালি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা জনবল চেয়ে বারবার চিঠি দিয়ে যাচ্ছি। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।