শেরপুরে ১৬ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত : দুই শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি

শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুর জেলা শহরের গোপালবাড়ি এলাকার ইউনাইটেড স্কুলের ৫ম শ্রেণির ১৬ শিক্ষার্থীকে বেধড়ক বেত্রাঘাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে । এ ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীকে রাতে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষার্থীরা হলো, জেলা শহরের গোপালবাড়ি মহল্লার মাইনুল ইসলামের মেয়ে মারিয়া আক্তার জুঁই (১০) ও জজ মিয়ার মেয়ে ফাতেমা আক্তার ঝুমা (১০)।
অভিভাবকদের অভিযোগ, ইউনাইটেড স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষে খাতা দিতে দেরি করায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক পঙ্কজ দেবনাথ ১৬ জন শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে বেধড়ক পিটুনি দেয়। এসময় তিন শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে মাথায় পানি দেয়ার পর তাদের জ্ঞান ফিরে আসে। স্থানীয় ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদেরকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু রাতে শরীরে ব্যথা ও আতঙ্কিত হয়ে পড়ায় তাদের অভিভাবকরা রাতে জুঁই ও ঝুমাকে শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। এসময় শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা দায়ী শিক্ষকের বিচার দাবী করেন।
এব্যাপারে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার জুঁই বলে, আমাদের শ্রেণীকক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। ঘন্টা দেওয়ার পর আমরা খাতা দিতে কিছু সময় দেরি করেছিলাম। তাই আমাদেরকে পঙ্কজ স্যার বেত দিয়ে মেরেছে। পরে সবাইকে মলম লাগিয়েছে। বড়ি খাইয়ে দিয়েছে। আমার মাথায় পানি দিয়েছে। আরেক শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার ঝুমা বলে, আমাদের ক্লাসে ২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। চারজন বাদে ১৬ জনকে স্যার মেরেছে। আমার সেন্স ছিলো না। আমার অনেক ব্যাথা লেগেছে।
অভিভাবক রিনা আক্তার বলেন, আমার কাছে স্কুল থেকে খবর আসে যে, আমার মেয়ে অসুস্থ। স্কুলে গিয়ে দেখি আমার মেয়ের মাথায় পানি দিচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলে শিক্ষক বলেন যে, লেখাপড়া করলে এরকম পিটুনি খেতেই হবে। আমার মেয়ে ভয় পাচ্ছে। ব্যাথা বেশি অনুভব করায় রাতে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। আরেক অভিভাবক স্বপ্না বেগম বলেন, ১৬ জনকে পিটিয়েছে। আমার মেয়ের অবস্থা বেশি খারাপ হয়েছিলো। তাই হাসপাতালে ভর্তি করেছি। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, বিষয়টি যেমন মানুষ মনে করছেন সেটি নয়। আর শিক্ষার্থী ১৬ জন নয় শিক্ষার্থী হলো ১৩ জন। গতকাল পরীক্ষা চলছিলো। আমি লক্ষ্য করি শিক্ষার্থীরা বই বের করে লিখছিলো তাই আমি দুইজন শিক্ষার্থীকে শাসন করি। কিন্তু অভিভাবকরা এটা নেতিবাচকভাবে নিয়েছে।
শেরপুর জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আফরোজা আক্তার জাহান জানান, দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে আনার পর আমরা তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। তাদেরকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।