শেরপুরে ৮৩ হাজার কোরবানির পশু প্রস্তুত

শেরপুর সংবাদদাতা : কোরবানিকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন শেরপুরের খামারিরা। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবারের ওপর ভিত্তি করে এসব খামারে কোরবানির পশু লালন পালন করা হচ্ছে। তবে প্রতিবছর এ সময়ে কিছু চক্র ভিনদেশ থেকে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে চোরাই গরু দেশে আনতে উঠে পরে লেগে যায়। ফলে গরুর বাজারদর কমে যায়। এতেই স্থানীয় খামারিরা কাাংখিত দাম পায় না। এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও পুলিশ প্রশাসন তৎপর আছে বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের কাছে এ ব্যাপারে সহায়তাও চেয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ৫টি উপজেলার ছোট বড় প্রায় ১৩ হাজার ৭৩১ জন খামারি রয়েছেন। এ ছাড়াও অনেক পরিবার ব্যক্তিগতভাবে গরু, মহিষ ও ছাগল পালনের সঙ্গে জড়িত। এবার কোরবানির জন্য শেরপুর জেলায় ৫১ হাজার ২২৫টি পশুর চাহিদা থাকলেও প্রস্তুত রয়েছে ৮৩ হাজার ৮০২টি পশু। যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ৩২ হাজার বেশি। পশুগুলো হলো- ৪০হাজার ২৭০টি ষাঁড়, ২হাজার ৮৬৫টি বলদ, ১৩হাজার ৭৯৪টি গাভি, ১হাজার ৩৮৬টি মহিষ, ২২হাজার ৩৯টি ছাগল, ৩ হাজার ৪৪৮টি ভেড়া। প্রস্তুত করা এসব পশু নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাইরে হাট বাজারগুলোতে বিক্রি হবে। জেলার কয়েকটি খামারে গিয়ে দেখা যায়, যেসব গরু কোরবানীতে বিক্রি করা হবে সেসব গরুকে পৃথক করে রাখা হয়েছে। নেওয়া হচ্ছে বাড়তি যতœ। ওই গরুগুলোকে নিয়মিত ডাক্তারি পরীক্ষাও করা হচ্ছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকেও নেওয়া হচ্ছে নিয়মিত খোঁজখবর। খামারি বিল্লাল হোসেন বলেন, কোরবানি উপলক্ষে আমার খামারে ২০টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব গরুর নিয়মিত যতœ নেওয়া হচ্ছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হয়েছে। তবে গোখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় এসব গরুর পেছনে বেশি খরচ হয়েছে। এখন বাজারদর নিয়ে শঙ্কায় আছি। পাপ্পু নামের সদর উপজেলার এক খামারি বলেন, আমরা যতেœর সঙ্গে গরু লালন পালন করি। নিজেদের ক্ষেতের কাঁচা ঘাস খাওয়ানো হয় গরুগুলোকে। তবে ভারতীয় গরু যদি কোনোভাবে ঢুকে পরে তাহলে আমাদের পরিশ্রম বৃথা যাবে। প্রশাসনের কাছে খামারিদের রক্ষা করতে অবৈধ গরু প্রবেশ বন্ধে এখন থেকেই কাজ করতে হবে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার ডা. রেজওয়ানুল হক ভূঁইয়া জানান, কোরবানির পশুকে অসদুপায়ে মোটাতাজা না করার জন্য আমরা বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করেছি। তাছাড়া বিভিন্ন ভেটেরিনারি ফার্মেসিতে নি¤œমানের ওষুধসামগ্রী না রাখার বিষয়ে তদারকি করা হচ্ছে। তবে কয়েক দফায় গোখাদ্যের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ কিছুটা বেড়েছে খামারিদের। দেশে অবৈধ গরু প্রবেশের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে জেলা পর্যায়ের ঊর্ধ্বতনদের উন্নয়ন সমন্বয় সভায় অবহিত করেছি। সভায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এই রেজুলেশন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পোঠানো হবে। এ ব্যাপারে শেরপুর পুলিশ সুপার মো. আকরামুল হোসেন পিপিএম বলেন, বর্ডার আমার এরিয়া নয়। বর্ডার অন্য সংস্থার আন্ডারে। তবে বর্ডার ফাঁকি দিয়ে আমার এলাকায় অবৈধভাবে গরু প্রবেশ করলে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।