অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় তিন দশক ধরে পশ্চিম বাংলার চলচ্চিত্রে রাজত্ব করেছেন। তারা একসঙ্গে একের পর এক ছবি করে দর্শকদের মনে রাতারাতি জায়গা করে নিয়েছিলেন। সে কারণে তাদের সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে বরাবরই ছিল আলোচনা।
অনেকেই বলেন, উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেনের পর বাংলার জনপ্রিয় জুটি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। কোথাও গিয়ে কী এই জুটির সমীকরণই শেষ হয়ে গেছে? একটা সময় এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছিল ভক্তরা। তবে তাদের মধ্যে সম্পর্কের সমীকরণ ঠিক কতটা মজবুত ছিল, তাও জানতে মরিয়া ছিলেন ভক্তরা। এক সাক্ষাৎকারে সেই প্রশ্নের উত্তরই দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
তারা কী সত্যি প্রেম করতেন? এমন প্রশ্ন করাতে ঋতুপর্ণা বলেছিলেন, লোকে তো তাই মনে করতেন। তবে আমি বলল ২৪ ঘণ্টা একটা মানুষের সঙ্গে থাকলে, কাজ করলে, একটা ভালোবাসা, নির্ভরতা তো তৈরি হয়। তবে কি এই ভালোবাসা প্রেম নয়? এই উত্তর আমি দেব না, এই প্রশ্নের উত্তর রহস্যই থাক। মানুষ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াক যুগ যুগ ধরে।
তাদের জুটি সবার চর্চার কেন্দ্রে জায়গা করে নিয়েছিল। তবে তাদের পর আর টলিপাড়ার জুটি সেভাবে কেন তৈরি হচ্ছে না, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, এখন তবে কোথায় কমতি? উত্তরও দিয়েছিলেন নিজেই। জানিয়েছিলেন কোথাও গিয়ে যেন আন্তরিকতার অভাব, হৃদয়টা থাকছে না। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত সেদিন রাখঢাক না করেই বলেছিলেন, প্রচুর পরিশ্রমের ফল এই জুটি। প্রচুর মানুষের ভালোবাসা আছে। প্রচুর মানুষের আশীর্বাদ রয়েছে। প্রচুর মানুষকে এই জুটি প্রেক্ষাগৃহে নিয়ে গেছে। দর্শকদের দেখেছি তো, তারা কাঁদছেন, হাত দিয়ে ছোঁয়ার জন্য ডাকছেন।
তিনি বলেন, এটা রাতারাতি তৈরি হতে পারে না। সেখানে তো আমাদেরও ১০০ শতাংশ কমিটমেন্ট রয়েছে কাজের প্রতি। শুধু কটা হোডিং, কটা পোস্টারে তো সীমাবদ্ধ নেই। কাজের প্রতি ভালোবাসাটাই আসল। এত বছরেও এই কমিটমেন্টটা কখনো নষ্ট হয়নি।
এই জুটি ভেঙে যাওয়ায় কী জীবনে শূন্যতা নেমে আসে ঋতুপর্ণার? না, সেভাবে নয়, তবে সংগ্রামটা ছিল। ঋতুপর্ণার কথায়, সংগ্রাম আগেও ছিল, এখনো রয়েছে। তবে একসঙ্গে কাজ করার সংগ্রামের সংজ্ঞাটা একটু অন্যছিল। তখন একসঙ্গে প্রচুর ছবি করা। সকাল থেকে রাত হয়ে কখন যে ভোর হয়ে যেত বুঝতেই পারতাম না। সেখানে কোনো মেকআপ ভ্যান নেই…।
আজ সময়টা অনেক পাল্টে গেছে। আবারও তারা পর্দায় ফিরছেন একসঙ্গে। আবারো একই ফ্রেমে জুটিকে পাওয়ার খবর সামনে আসতেই আলোচনা তুঙ্গে। ‘অযোগ্য’ ছবিতে আবারো তারা একসঙ্গে কাজ করতে যাচ্ছেন।