নিজস্ব সংবাদদাতা : জামালপুরে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্কের মাধ্যমে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় বৃহস্পতিবার জামালপুরে আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম পিপিএম।
পুলিশ সুপার তার বক্তব্যে বলেন নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। মেয়েরা নির্যাতনের শিকার হয়েও তা প্রকাশ করতে চায়। প্রকাশ করলে সমাজ ও পরিবারের কাছ থেকে উল্টো দোষারোপ শোনতে হয়। মেয়েদেরও সাহসের সাথে এগিয়ে আসা এবং প্রতিবাদ করা শিখতে হবে। অভিভাবকদের উচিৎ তার কন্যা শিশু অথবা বোন, ভাগ্নি, মা, খালাদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করা। গুড টাস, বেড টাস সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও দপ্তরকে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে নিজের মনে করতে হবে।
পুলিশ সুপার বলেন প্রতিটি নেতিবাচক ঘটনাকে সবাই পুলিশের উপর দায় চাপাতে চায়। মানুষ শুধু ইউকে’র (যুক্তরাজ্য) মতো পুলিশ দেখতে চায় কেউ আর তাদের মতো মতো মানুষ হতে চায় না। তিনি নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
সকাল ১১টা পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে ইউএনএফপিএ এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল মাহমুদ পিপিএম, সিভিল সার্জন ডাঃ আজিজুল হক, জামালপুর জেনারেল হাসপতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মাহফুজুর রহমান, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুর আলম, জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ডেন্ট অফিসার মীর বহর শাহাদাৎ হোসেন, জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ, জামালপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সামছুল হক, বকশিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাকের আহমদ, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক ও বাংলারচিঠি ডটকমের সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম, জেলা ব্র্যাক সমন্বয়ক ওমর ফারুক, তরঙ্গ মহিলা কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শামীমা খান, জামালপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী প্রমা প্রমুখ। সভায় ধারণা পত্র উপস্থাপন করেন ইউএনএফপিএ এর প্রতিনিধি আতাহার আলী।
সভায় পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, শিক্ষা বিভাগ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, মহিলা অধিদপ্তরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি সংস্থা ও সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি প্রচলিত আইনের কার্যকর ভূমিকা, বিচারিক কার্যক্রমের দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার, ডাক্তারি পরীক্ষা স্বচ্ছতার সাথে দ্রুত সম্পন্ন করা, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুলিশি তদন্ত সম্পন্ন করে আদালতে চার্জসিট দাখিল করা, বিদ্যালয়ভিত্তিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা, উঠান বৈঠক করা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মের মর্মবাণী প্রচার করা, তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহার বন্ধ করা, সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন অটুট রাখাসহ সহিংসতা বন্ধে করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
সবাই যুক্তরাজ্যের মতো পুলিশ দেখতে চায় কেউ তাদের মতো মানুষ হতে চায় না
