ইরান তার সামরিক বাজেট তিনগুণ করার পরিকল্পনা করেছে বলে দেশটির একজন সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড এবং লেবাননে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর আক্রমণের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী ইসরায়েলের সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই এই পদক্ষেপ নিচ্ছে তেহরান। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ইরানের সরকারি মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি মঙ্গলবার বলেছেন, পরিকল্পিত প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধি সংসদে অনুমোদনের জন্য পেশ করা সরকারের একটি প্রস্তাবের অংশ।
আরও বিশদ বিবরণ না দিয়ে মোহাজেরানি বলেছেন, “দেশের প্রতিরক্ষা বাজেটে ২০০ শতাংশের মতো উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।”
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিতর্ক হবে এবং এরপর ২০২৫ সালের মার্চ মাসে আইনপ্রণেতারা এটি চূড়ান্ত করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মূলত সংবাদ সম্মেলনে এই মুখপাত্র সামরিক বাজেট ২০০ শতাংশেরও বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি এই বাড়তি বাজেট কোন খাতে ব্যয় হবে সেই ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে পারেননি।
মূলত সরকার স্বীকার না করলে তেহরানের বার্ষিক সামরিক ব্যয়ের সঠিক পরিসংখ্যান বের করা অত্যন্ত কঠিন। তবে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটির সামরিক বাজেটের সর্বোচ্চ অংশ ইসলামি রেভ্যুলিউশনারী গার্ড (আইআরজিসি) পেয়ে থাকে।
আর নিয়মিত সেনাবাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীর অন্যান্য শাখাগুলোর বরাদ্দ আইআরজিসির চেয়ে তুলনামূলক অনেক কম।
এদিকে ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমায়েল বাঘাই বলেছেন, ইসরায়েলি হামলার জবাব দিতে সব ধরনের সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হবে।
তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজ দেশের এমন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে গত শনিবার ইরানে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। তেহরান বলেছে, হামলায় তাদের সীমিত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শনিবার তেহরান ও ইরানের পশ্চিমাঞ্চলে সমরাস্ত্র কারখানাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূণ স্থাপনায় তিন দফা বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
এই হামলার পর নতুন করে উভয় দেশের হামলা-পাল্টা হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের শক্তি প্রদর্শনের মাত্রা ইরানি কর্মকর্তারাই নির্ধারণ করবেন।
প্রসঙ্গত, গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইরান। আর তারই জবাবে ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালাবে- গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এমন ধারণাই করা হচ্ছিল। মূলত ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বহুল প্রতীক্ষিত প্রতিক্রিয়া হিসেবে শনিবার ভোরে ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
ইরানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তেহরান, খুজেস্তান ও ইলাম প্রদেশে এবার হামলা করেছে ইসরায়েল। এসব হামলা সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলার দাবি করছে দেশটির সামরিক বাহিনী। একই সাথে কিছু জায়গায় ‘সামান্য ক্ষতি’ হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।