জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হস্তশিল্পি, কারচুপি ও হ্যান্ড এমব্রয়ডারি শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে পহেলা মে (বৃহস্পতিবার) সকালে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্টিত হয়। উক্ত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মো. ইব্রাহীম হাসান মিঠু। তিনি বলেন- রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তিক শ্রমিক সংগঠন, অব্যবহৃত শ্রম আইন এবং অনানুষ্ঠানিক খাতে আটকে থাকা কোটি শ্রমজীবী মানুষের করুণ বাস্তবতায় মহান মে দিবস আজ প্রশ্নবিদ্ধ।
১. বয়স্ক শ্রমিকদের বয়স্ক ভাতা আওতায় আনা হোক ।শ্রমিকদের আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা ।
২. রাষ্ট্রের রেমিটেশন অবদানে সরকারি উদ্যোগে শ্রমিককে পাঠানো হোক।শ্রমিকদের কর্মস্থলে মান নিশ্চিত লক্ষে ইনকোয়েরি সেল গঠন করা । ৩.যখন তখন শ্রমিককে বহিষ্কার করা যাবে না এবং বর্তমান বাজার অনুযায়ী বেতন নির্ধারণ করা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা ।৪. ভারতীয় কোন কমপ্লিট পোশক বা বিদেশি পোশাক আমদানি নিষেধাজ্ঞা করা।৫. সময় মত বেতন বা মজুরি ওভার টাইমের টাকা প্রদানের ব্যবস্থা করা ।
৬.এই শিল্পকে বাঁচাতে হলে ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা । ৭. শ্রম আইন বাস্তবায়নে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু আইন থাকা নয়, তার কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি।
৮. শ্রম আদালতের সংস্কার ও ডিজিটালাইজেশন প্রয়োজন। দ্রুত বিচার নিশ্চিতে সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে।
৯. রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, স্বতন্ত্র শ্রমিক সংগঠন গড়ে তোলা জরুরি। নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের জন্য একটি বিশেষ নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, যেখানে তাদের স্বাস্থ্য, আবাসন ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। ILO কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ বাস্তবায়নে একটি নিরপেক্ষ মনিটরিং সেল গঠন করা উচিত। যেখানে থাকবে সরকার, শ্রমিক প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণ।
মে দিবস যেন স্মারকই না হয়, হয় শপথের দিন:
মে দিবস শুধু অতীতের গৌরব নয়, এটি ভবিষ্যতের প্রেরণাও। বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষ আজও রক্ত ঝরাচ্ছে অন্যায় শোষণের বিরুদ্ধে। কিন্তু তাদের কণ্ঠ আজও চাপা পড়ে রাজনৈতিক লাঠিয়াল বাহিনীর নিচে। এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার—আইন দিয়ে, নীতি দিয়ে, কিন্তু সবচেয়ে বেশি দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা দিয়ে।
আমাদের প্রজন্ম যদি শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নের শপথ না নেয়, তাহলে মে দিবস আমাদের কাছে কেবল একটি ইতিহাস হবে—যা আমরা প্রতি বছর স্মরণ করবো, কিন্তু তার শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবো। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কুরবান কোরাইশী, আরিফুজ্জামান মানিক, মো. আরমান, মো. সানাউল্লাহ,মানবাধিকার কর্মী মো. রাব্বি, মোস্তাফিজুর রহমান আনসারী ( সুমন), মো. হোসেন আলী প্রমুখ ।