‘৫০ হাজারের জন্য কৃষক গ্রেপ্তার অথচ ২২শ কোটির সুদ মওকুফ হয়েছে’

জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ৫০ হাজার টাকার জন্য কৃষক গ্রেপ্তার হয়েছে। অথচ ২ হাজার ২০০ কোটির সুদ মওকুফ করা হয়েছে।

সোমবার (১০ জুন) সংসদ অধিবেশনে ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০২৪’ পাসের প্রস্তাবে অংশ নিয়ে চুন্নু এ কথা বলেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বড় কাজ ব্যাংকিং খাতকে সুপারভাইজ করা। কিন্তু জনগণের টাকা লুটপাট হচ্ছে, ব্যাংকে অনিয়ম হচ্ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বা বাংলাদেশ ব্যাংক কী সুপারভাইজ করছে? পিকে হালদার কয়েক হাজার কোটি নিয়ে চলে গেছেন, বিভিন্ন সময় বড় বড় প্রতিষ্ঠান ঋণ নেয়; পরে তাদের সুদ মওকুফ করা হয়, এসবের জবাব কী অর্থমন্ত্রী দিতে পারবেন।

তিনি বলেন ডলার সংকটের বড় কারণ পাচার। আগের অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে কিছুই শুনতে চাইতেন না। 

আর্থিক খাতে অনিয়ম বন্ধের দাবি জানিয়ে চুন্নু বলেন, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, আমলা যেই হোক যারা বিদেশে টাকা পাচার করেছেন, কানাডা, ইউরোপ আমেরিকায় বাড়ি, হোটেল করেছেন তদন্ত করে তাদের চিহ্নিত করা হোক। টাকা ফেরত আনাতে না পারলেও তাদের চিহ্নিত করুন।

আইসিটি বিভাগের লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে চলছে কি না তার খবর নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ বলেন, এ প্রকল্পে যারা লার্নিং করতে আসে তারা সঠিকভাবে আত্মস্থ করতে পারে না। এখানে অপব্যয় হচ্ছে। 

যশোরে শেখ হাসিনা আইসিটি পার্কের অনিয়মের বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন তুলে ধরেন মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নামে আইসিটি পার্ক করেছেন, সেখানে হোটেল ম্যানেজম্যান্ট, বিয়ের অনুষ্ঠান, সামাজিক অনুষ্ঠান কী করে হয়? ব্যবস্থাপনা সরকার না করে তৃতীয় পক্ষকে কেন দেওয়া হয়েছে?

আরেক স্বতন্ত্র সদস্য হামিদুল হক খন্দকার বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কেন অতিরিক্ত মঞ্জুরি দাবি করেছে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। অতীতে আরাফাত রহমান কোকোর পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। দেশে লুটপাট করে যারা অর্থ পাচার করেছেন, তাদের সে অর্থ ফিরিয়ে আনতে হবে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পংকজ নাথ বলেন, দেশ থেকে টাকা পাচার হচ্ছে। এ বিষয়ে কঠোর হতে হবে। ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এলসি খোলার ক্ষেত্রে যে সংযত নীতি পরিহার করে আরও উদার হওয়া দরকার।

ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

স্বতন্ত্র এই সংসদ সদস্য বলেন, আইসিটি খাতে কাজ যে হচ্ছে না তা ঠিক নয়। তবে, দোয়েলের বাক্স খুললে যদি চায়নিজ কম্পিউটার পাওয়া যায় তাহলে- এটা কি অপচয় না, দুর্নীতি? এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাটা কি নিয়েছেন তা সংসদ জানতে চায়। দোয়েলের বাক্স খোলার পরে দেখা গেল চায়নিজ পচা মাল। এরপর বন্ধ করে দিলেন। 

তিনি বলেন, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের নামে যে কম্পিউটার দিয়েছেন তা কি আদৌ কাজ হচ্ছে নাকি জং ধরে গেছে। ডাক বিভাগের আধুনিকায়নের নামে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। 

ডাক বিভাগের জমির অবস্থা কী জানতে চান তিনি।