Friday, May 17, 2024
Homeজাতীয়শরীর ও মন সুস্থ রাখতে বিশুদ্ধ বাতাস

শরীর ও মন সুস্থ রাখতে বিশুদ্ধ বাতাস

আবদ্ধ ঘরে দিনের অনেকখানি সময় কাটানোর পর প্রায়ই আমাদের মনে হয় গুমোট কোথাও বসে যেনো দম নিচ্ছি আমরা! অবাক হওয়ার কিছু নেই, আমাদের বেশিরভাগেরই এমন মনে হয়; কারণ এরকম আবদ্ধ স্থানেই আমরা গড়ে আমাদের দিনের ৯০ শতাংশ সময় কাটাই। এখনকার সময়ে আমাদের ক্লাস, কাজ বা বিনোদন, যাই হোক না কেন সবই ইনডোরে চলে এসেছে। এরমধ্যে আবার বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে কিছুটা উষ্ণ আবহাওয়া থাকায়, খুব স্বাভাবিকভাবেই আমাদের অনেকে এয়ার কন্ডিশনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। ফলে, আমাদের ঘরের ভেতর কাটানো সময় যেন আরও বেড়ে গেছে। পাশাপাশি, উদ্বেগজনক বিষয় হিসেবে বায়ু দূষণ তো রয়েছেই।

এ রকম গুমোটভাবের জন্য বিশুদ্ধ বাতাসের অভাবই প্রধানত দায়ী। বিশুদ্ধ বাতাস যে শুধুমাত্র আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি তাই নয়, পাশাপাশি আমাদের কাজের সক্ষমতা ও কার্যকরভাবে চিন্তা করার ওপরও এর প্রভাব রয়েছে।

বাতাসের মান কীভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করে চলুন আজ তা জেনে নিই।

জ্ঞানভিত্তিক কার্যক্রম ও স্বাস্থ্য ভালো রাখা

বাতাসের মান অস্বাস্থ্যকর হলে সেখান থেকে যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন আমাদের মস্তিষ্কে পৌঁছায় না। ফলে, আমাদের জ্ঞানভিত্তিক কার্যক্রম (কগনিটিভ ফাংশন) ব্যাহত হতে পারে। অন্যদিকে, বিশুদ্ধ বাতাস অক্সিজেনে ভরপুর থাকে; যা আমাদের মনোযোগ, সতর্কতা ও জ্ঞানভিত্তিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই সক্ষমতা বৃদ্ধি আমাদের মনকে প্রফুল্ল রাখে যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতাকে সমৃদ্ধ করে। পাশাপাশি, সঠিক পরিমাণে অক্সিজেন প্রবাহ আমাদের রক্তচাপ ও হার্টরেট ঠিক রাখতে সহায়তা করে, আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য যা অত্যন্ত জরুরি।

প্রাকৃতিকভাবে উদ্দীপনা বাড়ায়

বিশুদ্ধ বাতাসে নিঃশ্বাস নিলে এর সমৃদ্ধ অক্সিজেন আমাদের দেহে সেরোটোনিন নিঃসরণ করতে সাহায্য করে; আর এই হরমোন আমাদের সুখ ও সন্তুষ্টির অনুভূতির জোগান দেয়। ফলে, শরীরে সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়তে থাকায় বিষণ্ণতা ও মানসিক চাপ কমে আসে, যা আমাদের সামগ্রিক সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে

করোনা মহামারির পর থেকেই বলা চলে আমরা শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখার বিষয়ে আরও বেশি যত্নশীল হয়েছি। তার ওপর দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হিসেবে তো আমাদের সামনে দূষণ রয়েছেই। বিশেষ করে, ব্যক্তিভেদে নানান রকম অ্যালার্জি ও স্বাস্থ্য পরিস্থিতির সাথে যুক্ত হয় এই দূষণ। পরিশুদ্ধ বাতাস আমাদের কার্যকরভাবে শ্বাস নিতে সাহায্য করে, আর আমাদের ফুসফুস বিশুদ্ধ অক্সিজেন-সমৃদ্ধ বাতাস গ্রহণ করার সুযোগ পায়। আর ইদানিং আমরা যেহেতু ইনডোর কার্যক্রমে বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি, তাই আমাদের ঘরের ভেতরের বাতাসকে পরিশুদ্ধ করার সুযোগই সবার আগে নিতে হবে। এক্ষেত্রে, বিভিন্ন রকম দামের মধ্যে স্যামসাংয়ের এয়ার পিউরিফায়ার ঘরের বাতাসকে বিশুদ্ধ করতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর হতে পারে।

ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক

স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের স্মৃতি ঠিকঠাক রাখা, বিপাকক্রিয়া স্বাভাবিক রাখা ও ক্লান্তি-অবসাদ কমিয়ে আনতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ঘরের ভেতর বিশুদ্ধ বাতাস-সমৃদ্ধ পরিবেশ তৈরি করা গেলে রাতে একটি স্বস্তির ঘুম নিশ্চিত করা যায়। আর এতে করে ভালোভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া সম্ভব হয়, যা দেহের তাপমাত্রা অনুকূলে রেখে একটি প্রশান্তিদায়ক ঘুম উপহার দেয়।

জীবনের এতো শত ব্যস্ততার মাঝে অক্সিজেন-সমৃদ্ধ ও দূষণমুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশ একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলা অনেকের জন্যই বিলাসিতা মনে হতে পারে। আর যেহেতু আমরা দিনের পুরোটা সময়ই এই দূষিত নগরী অথবা আবদ্ধ কোনো ঘরে কাটাই, তাই আমাদের শরীরে বিশুদ্ধ বাতাসের চাহিদা রয়েই যায়। মৌলিক এই প্রয়োজনকে কোনোভাবেই উপেক্ষা করা সম্ভব নয়।

আমাদের ভালো থাকার জন্য বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক বাতাস গ্রহণ করা উচিত। এক্ষেত্রে, বর্তমান সময় বিবেচনায় সবচেয়ে বাস্তবসম্মত উপায় হতে পারে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা। প্রয়োজনীয় এ অ্যাপ্লায়েন্সটি আমাদের ঘর, অফিস বা ক্লাসরুম থেকে বিষাক্ত গ্যাস, জীবাণু বা বাতাসের ক্ষতিকর উপাদান কমিয়ে এনে বিশুদ্ধ বাতাস সরবরাহ নিশ্চিত করে।

দেশের বাজারেই পাওয়া বিভিন্ন ধরনের এয়ার পিউরিফায়ার; অপসারণ করতে পারে ৯৯.৯৭ শতাংশ পর্যন্ত অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা। বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নেয়ার ক্ষেত্রে সচেতন পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের শরীর ও মনকে সুস্থ রাখা বা স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের দিকে একধাপ অগ্রসর হতে পারি।

Most Popular

Recent Comments