দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায়। অধিবেশন শুরুর কিছুক্ষণ আগে সংসদ কক্ষে প্রবেশ করেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সালাম ও কুশল বিনিময় করেন সংসদ সদস্যরা (এমপি)। সেখানে সরকার দলীয় এমপিদের চেয়েও স্বতন্ত্র এমপিদের অংশগ্রহণ বেশি দেখা গেছে। জাতীয় পার্টির (জাপা) দুই-একজন এমপিকেও প্রধানমন্ত্রীকে সালাম দিতে দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়ে স্যালুট জানান কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।
এ দিন ঘিয়ে রঙের জমিনে বেগুনি আঁচল ও পাড়ের জামদানি শাড়ি পরে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের দিকে সংসদ অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় আসনে বসার আগে প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে জড়ো হন এমপিরা। তারা সবাই সংসদনেতাকে সালাম দেন। কয়েকজন এমপিকে দেখা যায়— প্রধানমন্ত্রীকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে। নির্বাচনের আগে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে এমপি নির্বাচিত হওয়া শাহজাহান ওমরকে কুশল বিনিময় করতে দেখা যায়। পরে প্রধানমন্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়ে স্যালুট জানান কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। পরে তিনিও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশলবিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে সরকার দলীয় এমপি ছাড়াও স্বতন্ত্র এমপিরা পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেন। ভিড়ের কারণে যারা কাছে এসে সালাম করতে পারেননি, তারাও দূরে দাঁড়িয়ে সালাম দেন সংসদ নেতা শেখ হাসিনাকে। বিকেল ৩টার দিকে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করলে এমপিরা নিজ নিজ আসনের দিকে চলে যান।
এ সময় সবাইকে নিজ নিজ আসনে গিয়ে বসার জন্য চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনকে তাগাদা দিতে দেখা যায়।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পাওয়া আওয়ামী লীগ এবার টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করেছে। নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ভোট হওয়া ২৯৯টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২২৩টি। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও কল্যাণ পার্টি পেয়েছে একটি করে আসন। স্থগিত হওয়া নওগাঁ-২ আসনে ভোট হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি।
নির্বাচনের পর গত ১০ জানুয়ারি সংসদ সদস্যরা শপথ নেন। আর নতুন সরকার গঠিত হয় পরদিন ১১ জানুয়ারি।
সংসদের প্রথম সারিতে বসলেন যারা
সরকারি বেঞ্চের (স্পিকারের ডান পার্শ্বে) প্রথম আসনে বরাবরের মতো সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বসেছেন। এর পরের আসনটি ফাঁকা রয়েছে। এরপর পর্যায়ক্রমে সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আমির হোসেন আমু, আ ক ম মোজাম্মেল হক, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও তোফায়েল আহমেদ বসেন। মাঝের (স্পিকারের মুখোমুখি) অংশের প্রথম সারির বাম দিকের (স্পিকারের দিকে মুখ করে) প্রথম আসনে সাবেক অর্থ মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বসেছেন।
এরপর পর্যায়ক্রমে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, শিল্পমন্ত্রী ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু ও শেষ আসনে বসছেন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু।
বিরোধীদলীয় বেঞ্চের (স্পিকারের বাম দিকে) প্রথম আসনে বসছেন বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তার বাঁয়ে বসছেন সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এরপর পর্যায়ক্রমে বসেছেন জাপার রুহুল আমিন হাওলাদার, কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম, স্বতন্ত্রের হুসামউদ্দিন, আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা ও স্বতন্ত্র এমপি আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন।