নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় প্রকৌশলী আলামিনকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শামীমা পারভীন এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত দুইজন আসামি কারাগারে থাকলেও বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মরিচাকান্দি গ্রামের আ. করিমের ছেলে নুরুল আমিন ওরফে রাহুল, ভাটেরচর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মো. হৃদয় মিয়া, মরিচাকান্দি গ্রামের আলকাস মিয়ার ছেলে মো. কাউসার মিয়া, দুলালকান্দি এলাকার আওয়াল মিয়ার ছেলে মাহিন, একই এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে রাকিবুল ইসলাম শুভ, দড়িচন্ডিবের গ্রামের জসিম উদ্দিরে ছেলে সুমন ওরফে সুন্দর সুমন, বাঁশগাড়ী গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে আশ্রাব উদ্দিন ওরফে শাকিল, রায়পুরা সাহের চর গ্রামের কঠিল উদ্দিনের ছেলে রিপন, নোয়াকান্দি গ্রামের মহাজ উদ্দিনের ছেলে সাইদুর ও বেলাবো ভাটেরচর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে রুবেল। এদের মধ্যে মাহিন ও রাকিবুল ইসলাম শুভ কারাগারে রয়েছেন। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত আলামিন প্ল্যান ভিউ কনন্সালটেন্ট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স ফার্মের সহকারী প্রকৌশলী (ইঞ্জিনিয়ার) ছিলেন। ২০১৭ সালের ১৬ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে আলামিন নরসিংদী স্টেডিয়াম সংলগ্ন প্ল্যান ভিউ কনন্সালটেন্ট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারর্স কর্মস্থল থেকে বেলাবো বাড়ি ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার দড়িকান্দি খাইল্লা বন্দরের প্রথম ব্রিজের সামনে পৌঁছালে আসামিরা গতিরোধ করেন এবং মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে বাধা দিলে ছিনতাইকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আলামিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে তার মরদেহ পাশের একটি ক্ষেতের মধ্যে ফেলে মোটরসাইকেলটি নিয়ে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় নিহতের পিতা নাজিম উদ্দিন মোহন বাদী হয়ে বেলাবো থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক এ রায় দেন।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নিহত আলামিনের মামা ইঞ্জিনিয়ার মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিল হত্যাকারীদের ফাঁসি দেওয়া হবে। আদালত অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।
বাদীপক্ষের মামলার আইনজীবী অ্যাড. খন্দকার হালিম বলেন, আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।