দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতির চুক্তির আলোচনার মেয়াদ আরও একদিন বাড়ানো হয়েছে। গত রোববার ও সোমবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে এ আলোচনা হয়। তবে মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা বাসিম নাসিম জানান, যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভেস্তে গেছে। কারণ ইসরায়েল তাদের শর্ত মেনে নিচ্ছে না।
হামাসের এই নেতার এমন বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর জানা যাচ্ছে, আলোচনার মেয়াদ আরও একদিন বাড়ানো হয়েছে এবং আলোচনা চালিয়ে নেওয়ার জন্য হামাসের প্রতিনিধিরা আরও একদিন কায়রোতে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তারা মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফের বৈঠকে বসবেন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিভিন্ন অবৈধ বসতি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর ওইদিনই গাজায় ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েল।
তাদের এসব হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৮০ হাজার ফিলিস্তিনি।
যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে গাজায় ইসরায়েলকে বর্বরতা চালাতে সম্মতি দেয় পশ্চিমা দেশগুলো। তবে এখন তারা সুর পরিবর্তন করে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে।
বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এখন একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে। তারা চাইছে, পবিত্র মাস রমজানে সব ধরনের যুদ্ধ বন্ধ থাকুক। রমজানের আগে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্য নিয়েই কায়রোতে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু হামাস ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি শর্তের জন্য এখনো যুদ্ধবিরতিটি হচ্ছে না।
কায়রোর এই আলোচনা নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ইসরায়েল।
তবে ইসরায়েল কায়রোতে তাদের কোনো প্রতিনিধিকে পাঠায়নি। তারা দাবি করেছিল, যেসব জীবিত এবং মৃত জিম্মি এখনো গাজায় আছেন তাদের তালিকা দিতে হবে। এরপর তারা আলোচনায় যোগ দেবে। প্রথমে অন্তত ৪০ অসুস্থ, বৃদ্ধ ও নারীর তালিকা দিতে হবে যাদের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে।
হামাস জানিয়েছে, তাদের পক্ষে এখন তালিকা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ ইসরায়েলিদের অব্যাহত বোমা হামলার কারণে অনেক জিম্মি নিহত হয়েছেন। ফলে কারা জীবিত আছেন আর কারা মারা গেছেন সেই তালিকা প্রস্তুতে আগে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। এরপর তারা জিম্মিদের তালিকা দিতে পারবে।
ইসরায়েলের প্রতি পাল্টা দাবি ছুড়ে হামাস জানিয়েছে, জিম্মিদের মুক্ত করতে আগে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে। যেটি হবে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি।
এছাড়া হামাস দাবি জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পর গাজায় বিপুল ত্রাণ পৌঁছতে দিতে হবে এবং যেসব মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তাদের বাড়িতে ফিরতে দিতে হবে।
সূত্র: রয়টার্স