ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে সবচেয়ে বড় ক্ষতটা তৈরি হয়েছে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট। বিশ্ব ইতিহাসের নৃশংস ও জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে প্রায় সপরিবারে স্বাধীনতার মহানায়ককে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা আরো বেগবান হতো। সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়াকে টপকে যেতে পারতো বাংলাদেশ।
বুধবার (২৭ মার্চ) আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
ধর্মমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে, বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের রোল মডেল। বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সব অগ্রযাত্রার মূল নিয়ামক স্বাধীনতা।
ধর্মমন্ত্রী বলেন, মহান স্বাধীনতার ৫৪ বছরে পদার্পণ করেছে দেশ। বিগত ৫৩ বছরে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। শতভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। দারিদ্র্য ও অতি দারিদ্র্যের হার কমেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোর প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে। মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বের প্রথম সারির দেশ বাংলাদেশ। দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন বিশাল একটি জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু, কর্ণফুলী টানেল ও মেট্রোরেল নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি, সাবমেরিনের গর্বিত মালিক হতে পেরেছি। পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রাচীন বাংলা থেকে স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিক ইতিহাস তুলে ধরে মো. ফরিদুল হক খান বলেন, লাহোর প্রস্তাব অনুসারে যদি তৎকালীন পূর্ব বাংলা একটি আলাদা রাষ্ট্র হতো তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসটা অন্যরকম হতে পারতো। স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ তাজা প্রাণ যেতো না। ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম বিসর্জন দিতে হতো না। আমাদের বুদ্ধিজীবীদেরকে হারাত হতো না। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ও ১৩ নভেম্বর আসতো না।
মো. ফরিদুল হক খান বলেন, বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ে তোলা। সে লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তিনি সবাইকে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মো. বশিরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. ফজলুর রহমান, মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এএসএম শফিউল আলম তালুকদার, ৫৬০ মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. নজিবর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো. আনিসুর রহমান সরকার ও মো. হাবজ আহমদ প্রমুখ।
পরে বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফিরাত এবং দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মো. মিজানুর রহমান।