বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ইটটি মারলে পাটকেলটির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ‘তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
নানক বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কোনদিনও কারো দাক্ষিণ্য নিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পাকিস্তানী শক্তি ও তেইশ পরিবারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। জেনারেল আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে লড়াই করে জনতার শক্তি নিয়ে সত্তরের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও জেনারেল জিয়া- এরশাদ ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে নিরবিচ্ছিন্নভাবে লড়াই করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভোট-ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল বলেই গণতন্ত্র সেনা চাউনি থেকে বেরিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ ছিল ক্যূ পাল্টা ক্যূ’র বাংলাদেশ। কাজেই মির্জা সাহেব (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) আমি আপনাদেরকে বলবো, হাজার হাজার সামরিক অফিসারকে আপনাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হত্যা করেছিলো। আজকে বাংলাদেশে একটা গুলির শব্দ শোনা যায় না। এই বাংলাদেশে গঙ্গা চুক্তির সমাধান কেউ করেনি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঙ্গা চুক্তির মাধ্যমে ৪৪ হাজার কিউসেক পানি এনে জাতি সফলতা অর্জন করেছে। আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে মিয়ানমারের কাছ থেকে ১ লাখ ১১ হাজার বর্গ কিলোমিটার ও ভারতের কাছ থেকে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গ কিলোমিটার সমুদ্র এলাকায় নিজেদের অধিকার অর্জন করেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
যুবলীগের সাবেক এই চেয়ারম্যান বিএনপিকে উদ্দেশে বলেন, যার এক কানকাটা যায় সে হাঁটে রাস্তার পাশ দিয়ে, আর যার দুই কান কাটা, লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে সে হাঁটে রাস্তার মাঝখান দিয়ে। ওরা বেহায়া । ওদের লজ্জা নেই।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৬৮ বছরের অমীমাংসিত স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের মধ্যে ছিট মহলের মানুষ অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছে। ১১১টি ছিটমহলের ১৭৮৫১ একর জমি বাংলাদেশের সীমানার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে, বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বার্থ বিকিয়ে কারো সঙ্গে কোনো আঁতাত করে না। কাজেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা, যা বলবেন বুঝে শুনে বলবেন। ইটটি মারলে পাটকেলটি খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবেন।
তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসায় বাঙ্গালী জাতি স্বপ্ন দেখেছে। দেশ আজ বিশ্ব উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস। স্বাগত বক্তৃতা দেন সংগঠনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, বঙ্গবন্ধু গবেষক মো. আফিজুর রহমান প্রমুখ।