পরিবেশ রক্ষা ও তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর অবাধ পানি প্রবাহের দাবীতে গণ-সমাবেশ ও বিক্ষোভ প্রকাশ অনুষ্ঠিত হয়

পরিবেশ রক্ষা ও তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর অবাধ পানি প্রবাহের জন্য গণ- সমাবেশ ও বিক্ষোভ প্রকাশ অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ শে মে ২০২৪, শুক্রবার সকাল ১১ঘটিকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি কেন্দ্রীয় পরিষদ কর্তৃক আহ্বায়ক এম এ আলীম সরকার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

পশ্চিমা উন্নত দেশগুলোতে পরিবেশের অবস্থা সম্পর্কে কোনো বিবেচনা না করে শিল্প কারখানা ব্যাপক বিস্তারের ফলে পৃথিবীব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তিত হয়ে চলছে। ইতিমধ্যে এর ফলে বাংলাদেশ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতির একদিকে আছে স্বাস্থ্যগত অবস্থার ক্ষতি, মানুষের চিন্তা শক্তি ও শ্রমশক্তি কমছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বব্যাপী কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধবিগ্রহ লাগানো ও দীর্ঘস্থায়ী করার চেষ্টা ইত্যাদি ব্যাপারেও মানুষ তার পরিবেশের ক্ষতি করে চলছে।

পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিবর্গ ও তাদের সহযোগীরা এই সমস্যাকে সামান্যই গুরুত্ব দিচ্ছে। এই অবস্থায় এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকা সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিশ্বব্যাপী মানুষের কল্যাণের জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করা দরকার। কিন্তু মানুষ এসব বিষয় সম্পর্কে নির্লিপ্তই থাকতে চায়। এ অবস্থায় দরকার রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও বিশ্ব ব্যবস্থা নিয়ে পুনর্গঠনের মাধ্যমে উন্নতির অবস্থা সৃষ্টি করতে হবে। বিশেষ করে এই নতুন ধারা চিন্তা ও কাজ এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকা রাষ্ট্রগুলোকে অগ্রযাত্রী হয়ে কাজ করতে হবে। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে জাগিয়ে তুলতে হবে। পরিবেশের প্রশ্ন সামনে আসলেই কেবল প্রাকৃতিক পরিবেশের কথা বলা হয়। আমরা মনে করি প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি সামাজিক পরিবেশও গুরুত্বপূর্ণ । কাজ করতে হবে এই দুই ধারায়ই উন্নতি সাধনের জন্য।

কৃষিনির্ভর অর্থনীতির দেশ আমাদের নদী নালা খাল বিল বেষ্টিত বাংলাদেশ। বাংলাদেশে আন্ত:সীমান্ত ৫৭টি অভিন্ন নদীর মধ্যে ৫৪টি ভারতের মধ্য দিয়ে অন্য দেশে প্রবেশ করেছে এবং তিনটি নদী মায়ানমারে প্রবেশ করেছে। নানাভাবে বাঁধ দিয়ে ও খাল কেটে প্রধান নদীগুলোর পানি ভারতের নানা অঞ্চলে নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ফাঁরাক্কা বাঁধের ফলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিস্তার পানি দিচ্ছে না। এর ফলে বাংলাদেশ আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ আজকে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে । পদ্মাসহ বিভিন্ন নদীতে চড় পড়ে গিয়েছে। নদীগুলোতে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ না থাকায় আমাদের জনজীবন, সার্বিক পরিবেশ, প্রাণ -প্রকৃতি ও অর্থনীতি মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। জীববৈচিত্র ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সৃষ্টিকে টিকে থাকতে হলে পানি অপরিহার্য।

পানি ছাড়া কোনো জীব ও উদ্ভিদ জগত টিকে থাকার কোনো সম্ভাবনাই নেই। কিন্তু কঠিন বাস্তবতা হলো বাংলাদেশ ভাটির দেশ হওয়ায় এবং এদেশের প্রায় সবকটি নদীর উৎসমূল উজানের দেশসমূহে। ভারত ও চীনের আধিপত্য বিস্তারের ফলে নদীগুলোর অবাধ গানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। বর্তমান সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি পরিহার করে ভারত, চীন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দেশের সাথে সদিচ্ছা এবং অতীব গুরুত্বসহকারে কূটনীতিক ও রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে সকলের বাঁচা- মরার সাথে যুক্ত পানি ব্যবস্থা নদী সমূহের অবাধ পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। এইসব সমস্যার সমাধান দ্রুত করতে হবে।

আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক দুর্নীতি প্রতিরোধ আন্দোলনের আহ্বায়ক হারনুর রশিদ খান, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য লেখক অমূল্য কুমার বৈদ্য, সদস্য মশিউর রহমান খান এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।