হেড-স্টার্ক, নারিন-কামিন্স: ফাইনালের যত লড়াই

কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের মধ্যেকার ফাইনালে দুই দলের মাঝে পার্থক্য গড়ে দেয়ার মতো খেলোয়াড়ের অভাব নেই। তবে তাদেরকে আটকে রাখার মতো রসদও আছে দুই দলের কাছেই। ট্রাভিস হেড, অভিষেক শর্মা, হেনরিখ ক্লাসেন কিংবা প্যাট কামিন্স যেমন হায়দরাবাদের তুরুপের তাস। তেমনই সুনীল নারিন, মিচেল স্টার্ক, শ্রেয়াশ আইয়ার আর আন্দ্রে রাসেল কলকাতার বড় অস্ত্র। 

মিচেল স্টার্ক বনাম ট্রাভিস হেড 

বেশ কয়েক বছর আগে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাভিস হেড বলেছিলেন, মিচেল স্টার্ককে মোকাবিলা করাই তার জন্য সবচেয়ে কঠিন। এও বলেছিলেন, দুজনেই অস্ট্রেলিয়ান হওয়ার সুবাদে খুব একটা স্টার্কের সামনে পড়তে হয় না তাকে। আর এজন্য তিনি যথেষ্ট সৌভাগ্যবান। যদি আইপিএলের মেগা ফাইনালে এই মিচেল স্টার্ককেই সামাল দিতে হবে ট্রাভিস হেডের। 

এখন পর্যন্ত হায়দরাবাদের সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য ব্যাটার হেড। এবারের আইপিএলে ৫৬৭ রান করে আছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার চতুর্থ স্থানে। ৩২ ছয় আর ৬৪ চার তার ব্যাট থেকে এসেছে। একটি শতক আর চার অর্ধশতকও আছে। বোলারদের জন্য বলা চলে ট্রাভিস হেড এক দুঃস্বপ্ন। 

কিন্তু এই হেডের দুঃস্বপ্ন আবার মিচেল স্টার্ক। এখন পর্যন্ত ৫ বার স্টার্কের বলে আউট হয়েছেন হেড। তার মাঝে চারবারই মেরেছেন ডাক। এবারের কোয়ালিফায়ারেও এই স্টার্কের কাছেই আটকেছেন হেড। দুজনের লড়াইটা ফাইনালে পার্থক্যও গড়ে দেবে নিশ্চিতভাবেই। 

সুনীল নারিন বনাম প্যাট কামিন্স 

চলতি আসরে কলকাতার সবচেয়ে বড় ভরসার নাম সুনীল নারিন। দুর্দান্ত ব্যাট করছেন। বল হাতেও অসাধারণ তিনি। ফাইনালে আসার পথে করেছেন  ৪৮২ রান। ব্যাট হাতে কলকাতাকে বিধ্বংসী সূচনা এনে দিতে সিদ্ধহস্ত এই ক্যারিবিয়ান। এবারের আসরেই পেয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম শতক। 

৫০ চার আর ৩২ ছক্কা হাঁকানো কলকাতার এই ওপেনারকে থামানোর দায়িত্ব থাকবে প্যাট কামিন্সের ওপরে। নিজের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং দিয়ে নারিনকে কোয়ালিফায়ারে ঠিকই আটকে রেখেছিলেন কামিন্স। ফাইনালেও তাই হায়দরাবাদ অধিনায়কের দিকে থাকবে দৃষ্টি। 

শ্রেয়াশ আইয়ার বনাম ভুবেনেশ্বর কুমার 

দুই ভারতীয়। একজন বর্তমানের তারকা। আরেকজন সাবেক। শ্রেয়াশ আইয়ার এবং ভুবেনেশ্বর কুমার একে অন্যের অপরিচিত নন মোটেই। দুজন একে অন্যের মুখোমুখি হয়েছেন অনেকবার। আর তাতে ভুবেনেশ্বর এগিয়ে আছেন অনেকটাই। 

শ্রেয়াশকে আইপিএল এবং ঘরোয়া ক্রিকেট মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৯ বল করে মোটে ৪৪ রান দিয়েছেন ভুবনেশ্বর। আউট করেছেন তিনবার। কলকাতাকে কোয়ালিফায়ার পর্বে পথ দেখিয়েছেন আইয়ার। আজ ভুবনেশ্বরের কাজ থাকবে এই মারকুটে ব্যাটারকে থামানোর। 
ভারতের এই পেসারের বিপক্ষে আইয়ারের পরিসংখ্যান মোটেই সুবিধার নয়। মাত্র ৮৯.৮ স্ট্রাইকরেট এবং ১৫ এর কম গড়ে ব্যাট করেছেন এই পেসারের বিপক্ষে। আইয়ারকে আটকাতে তাই ভুবনেশ্বরেই আস্থা রাখবেন কামিন্স। 

হেনরিখ ক্লাসেন বনাম হারশিত রানা 

ক্লাসেন ঝড় তুলবেন, হায়দরাবাদের স্কোর প্রত্যাশার বাইরে যাবে। এটাই যেন এবারের আইপিএলের কমলা শিবিরের নিয়মিত দৃশ্য। হায়দরাবাদের ফিনিশার হিসেবে ক্লাসেন বড় ভরসার নাম। স্পিনের বিপক্ষে তিনি একেবারেই সাবলীল। 

শেষের এই ঝড় সামাল দিতে কলকাতার ভরসা হতে পারেন হারশিত রানা। যেহেতু স্পিনে বরুণ চক্রবর্তীর বিপক্ষে ক্লাসেনের ২৩০ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করার কীর্তি আছে, তাই রানার দিকে বেশি নজর থাকবে কলকাতা অধিনায়কের। এবছর ক্লাসেনের বিপক্ষে তার পারফরম্যান্সও বেশ আশা জাগানিয়া। 

এখন পর্যন্ত ক্লাসেনকে ১৩ বল করে ২৩ রান দিয়েছেন রানা। বিনিময়ে একবার পেয়েছে তার উইকেট। ফাইনালে হায়দরাবাদকে আটকে রাখতে তাই ডেথ ওভারে হারশিত রানার ওভারে কলকাতা রাখবে বিশেষ নজর।