পবিত্র হজ পালন শেষে দেশে ফিরছেন হাজীরা। গত ২০ জুন থেকে শুরু হয়েছে ফিরতি ফ্লাইট। শনিবার (২২ জুন) সকাল পর্যন্ত ১০টি ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন মোট ৩৯২০ জন। এদিকে হজ পালন করতে গিয়ে সৌদি আরবের মোট ৩৫ জন বাংলাদেশি হাজীর মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার ধর্ম-মন্ত্রণালয়ের হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছ। বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে হেল্পডেস্ক।
হেল্পডেস্কের তথ্যমতে, বাংলাদেশ বিমানের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ৪১৭ হাজী নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ফ্লাইটটি সৌদির কিং আবদুল আজিজ বিমানবন্দর ছেড়ে আসে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায়। পরদিন তিনটি বিমান সংস্থার আরও ১০টি ফ্লাইট হাজীদের নিয়ে দেশে ফিরেছে। হাজী নিয়ে শেষ ফ্লাইটটি দেশে ফিরবে ২২ জুলাই।
এদিকে চলতি বছর প্রখর তাপপ্রবাহ ও অসহনীয় গরমের জেরে হজ করতে গিয়ে সৌদি আরবের মৃত্যু একহাজার ছাড়িয়েছে। সৌদিতে তীব্র তাপদাহের কারণে ওই হজযাত্রীরা মারা গেছেন বলে জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৫ জন বংলাদেশি হাজীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে ১৭ জন বাকি ১৮ জন হজের আনুষ্ঠানিকতার শুরুর পর মারা গেছেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ সম্পর্কিত বুলেটিনে ৩৫ জন হাজী মারা যাওয়ার খবর বলা হয়েছে। মারা যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী। মক্কায় ২৮ জন, মদিনায় ৪ এবং মিনায় দুই জন এবং জেদ্দায় একজন মারা গেছেন।
হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পর যে ১৮ জন মারা গেছেন তারা হলেন, বরিশালের হিজলার আবু বকর সিদ্দিক (৫৯), ঝালকাঠির নূর মোহাম্মদ তালুকদার(৬৮), যশোরের অভয়নগরে শহিদুল ইসলাম (৪৯), ঝিনাইদহে কোটচাঁদপুর সুফিয়া বেগম (৮৭), চট্টগ্রামে রাউজানের আ স ম নুরুউদ্দিন চৌধুরী (৭২), ঢাকার মোহাম্মদপুরের জহিরুল ইসলাম (৭৩), মাদারীপুর শিবচরে ইদ্রিস খান (৫৬), ঢাকার বাড্ডার উম্মে কুলসুম (৪৭), ঢাকার বংশালের মনির হোসেন (৫৯), কিশোরগঞ্জের ফাতেমা ইয়াসমিন (৫৩), পিরোজপুরের নার্গিস (৬০), ঢাকা নিউ মার্কেটের আমিনুল ইসলাম (৬৫), নোয়াখালীর মোয়াজ্জেম হোসেন (৬৮), রংপুরের সিদ্দিকুর রহমান (৪৮), ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে মানিক তোফাজ্জল হক (৭০), ঢাকা মোহাম্মদপুরের রওশন আরা বেগম (৭২), বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার রেজাউল করিম মন্ডল (৬১), টাঙ্গাইল সদরের আলমগীর হোসেন খান (৭৩)।
হজডেস্কে তথ্যমতে, হজের আনুষ্ঠানিকাতা শুরুর আগে সর্বশেষ গত ১২ জুন বুধবার সৌদিতে দুজন মারা যান। মারা যাওয়া দুজন হলেন-মো. শাহ আলম (৭৭) ও সুফিয়া খাতুন (৬২)। তাদের বাড়ি যথাক্রমে কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ।
মারা যাওয়া অন্য হজযাত্রীরা হলেন-নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মো আসাদুজ্জামান (৫৭), মো. ভোলা জেলা মো. মোস্তফা (৯০), কুড়িগ্রাম জেলার লুৎফর রহমান (৬৫), ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জের মুরতাজুর রহমান (৬৩), চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার মোহাম্মদ ইদ্রিস (৬৪), ঢাকা জেলার মোহাম্মদ শাহজাহান (৪৮), কুমিল্লা জেলার আলী ইমাম ভুঁইয়া (৬৫), কক্সবাজার জেলা মহেশখালী উপজেলার মোঃ জামাল উদ্দিন (৬৯), কক্সবাজার জেলা রামু উপজেলার মোহাম্মদ নুরুল আলম (৬১), কক্সবাজার জেলা চকরিয়া উপজেলার মাকসুদ আহমদ (৬১), ফরিদপুর জেলার মমতাজ বেগম (৬৩), ঢাকার রামপুরার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম (৫৭), গাইবান্ধা জেলা গোবিন্দপুর উপজেলার মো. সোলাইমান (৭৩), রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শাহজাদ আলী (৫৫) এবং রংপুরে তারাগঞ্জের গোলাম কুদ্দুস (৫৪)।
সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, মরদেহ সৌদি আরবে দাফন করা হয়। নিজ দেশে আনতে দেওয়া হয় না। এমনকি পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না। মক্কায় হজ যাত্রী মারা গেলে মসজিদুল হারামে জানাজা হয়।