ভারতে নতুন সরকার গঠনের পর দেশটিতে প্রথম কোনো বিদেশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিপক্ষীয় সফর শেষ করেছেন শেখ হাসিনা। সফরে দুদেশের মধ্যে সাতটি নতুন ও তিনটি নবায়নকৃতসহ মোট ১০টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সমঝোতা। ৩০ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালে। দুবছর আগেই এ বিষয়ে পদক্ষেপকে মোদি সরকারের তড়িঘড়ি পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
শুধু তাই নয়—নতুন করে ফারাক্কা চুক্তি ‘বাংলা বিক্রির পরিকল্পনা’ বলেও অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
এই ইস্যুতে সংসদে গর্জে উঠার হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতার দল বলছে, বাংলাকে (পশ্চিমবঙ্গ) অন্ধকারে রেখেই ফারাক্কা–গঙ্গা চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সমঝোতা হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, ফারাক্কা-গঙ্গা চুক্তিতে রাজ্য সরকারও পক্ষ। কিন্তু নতুন সমঝোতার বিষয়ে রাজ্য সরকারকে কিছুই জানানো হয়নি। যা অত্যন্ত খারাপ। এছাড়া এই চুক্তি বাবদ রাজ্য সরকারের যে পাওনা টাকা, তাও বকেয়া রয়েছে। গঙ্গার ড্রেজিংয়ের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। যা পশ্চিমবঙ্গে বন্যা ও ভাঙনের প্রাথমিক কারণ হয়ে উঠেছে। এবার বাংলায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা আরও বাড়লো।ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, ঢাকা-দিল্লি বৈঠকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তৃণমূল বুঝিয়ে দিতে চাচ্ছে, সংবিধান অনুযায়ী কেন্দ্র চাইলে অন্য দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করার অধিকার রাখে, কিন্তু রাজ্যের বুকে রাজ্যকে এড়িয়ে রাজ্যের স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এমন কোনও কাজ করা দিল্লির জন্য সহজ হবে না।
কেন্দ্রকে এটা বুঝতে হবে, রাজ্য সরকার সহযোগিতা না-করলে তিস্তা পানি বণ্টনের মতো চুক্তি থমকে থাকে। ফারাক্কা ইস্যুতে তিস্তা পানি বণ্টন নিয়ে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে রাখলো মমতার সরকার।
তৃণমূল বলছে, আগামী ২০২৬ সালে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। সেখানে তার আগেই তড়িঘড়ি এই চুক্তি কেমন করে হলো?
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দাবি, এই চুক্তি আবার বাস্তবায়িত হলে মালদা, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ায় বন্যা এবং ভাঙন দেখা দেবে। তাতে বাংলার বিপুল পরিমাণ গ্রামের মানুষ বিপদের মুখে পড়বে।