শেরপুরে ঐতিহাসিক কাটাখালি যুদ্ধ দিবস পালিত

শেরপুর সংবাদদাতা ; নানা আয়োজনে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ঐতিহাসিক কাটাখালি যুদ্ধ দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসন ও আমরা ১৮ বছর বয়স, শেরপুরের উদ্যোগে র‌্যালি, শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে প্রথমে কাটাখালি ব্রিজ অঙ্গনে শহীদ নাজমুলসহ শহীদদের স্মরণে নির্মিত বেদীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। পরে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের সংসদ সদস্য এডিএম শহিদুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন পিপিএম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরো, ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম বাদশা ও ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম রাসেল।
আমরা ১৮ বছর বয়স, ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মো. তুষার আল নূরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আমরা ১৮ বছর বয়স’র জেলা ফেলো ও জনউদ্যোগের আহ্বায়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল প্রমুখ।
আলোচনা শেষে দিবসটি উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত র‌্যালি ও কাটাখালি ব্রিজের পাশে বৃক্ষরোপণ করেন অতিথিরা। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোসা. হাফিজা জেসমিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক, বিশিষ্ট সমাজসেবী রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়, মালিঝিকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৬ জুলাই শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ঐতিহাসিক কাটাখালি ব্রিজে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে ৩ মুক্তিযোদ্ধাসহ ১২ জন শহীদ হন। শহীদ হন একই পরিবারের ৩ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নাজমুল আহসান, মোফাজ্জল হোসেন ও আলী হোসেন। স্বাধীনতা অর্জনের পর শহীদ নাজমুলের নামে ময়মনসিংহ কৃষি বিদ্যালয়ে একটি হল, নালিতাবাড়ীতে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আর মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৮ সালে শহীদ নাজমুলকে স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ‘অপারেশন কাটাখালি’ ও রাঙ্গামাটিয়া যুদ্ধের সরকারি স্বীকৃতি মিলেছে।
এছাড়া স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও চেতনা ভাস্বর করে রাখার জন্য স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৯ বছর ২০২০ সালে পুরোনো সেই সেতুটি সংরক্ষণে ইতোমধ্যে সংস্কারসহ একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। সেইসাথে শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণের পাশাপাশি কাটাখালি ব্রিজ অঙ্গনে সম্প্রতি ইতিহাস লিপিবদ্ধকরণসহ দৃষ্টিনন্দন স্বাধীনতা উদ্যান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।