লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট জোসেফ বোকাই ঘোষণা করেছেন, তিনি তার বেতন ৪০ শতাংশ কমিয়ে দেবেন। তার কার্যালয় বলেছে, এর মাধ্যমে তিনি ‘দায়িত্বপূর্ণ শাসন’ এবং লাইবেরিয়ানদের সাথে ‘সংহতি’ প্রদর্শনের নজির স্থাপনের আশা করছেন।
সোমবার (৮ জুলাই) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, লাইবেরিয়ানরা জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় নিয়ে অভিযোগ করার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কঠোর তদন্তের অধীনে রয়েছে। পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের দৈনিক আয় ২ মার্কিন ডলারেরও কম।
প্রেসিডেন্ট জোসেফ বোকাই চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তার বার্ষিক বেতন ১৩ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার বলে প্রকাশ করেছিলেন। তবে বেতন কমানোর সর্বশেষ এই সিদ্ধান্তের ফলে তার বার্ষিক বেতন এখন ৮ হাজার ডলারে নেমে আসবে।
অবশ্য বোকাইয়ের আগে একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তার পূর্বসূরি জর্জ ওয়েহের। আফ্রিকার এই দেশটির সাবেক এই প্রেসিডেন্ট তার বেতন ২৫ শতাংশ কমিয়েছিলেন।
বিবিসি বলছে, পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটির কেউ কেউ প্রেসিডেন্ট বোকাইয়ের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু এটি আসলেই কোনও ত্যাগ কিনা তা অন্যরা এখনও ভাবছেন। কারণ দৈনিক ভাতা এবং চিকিৎসা সুবিধা কভারের মতো এখনও বেশ কিছু সুবিধা তিনি পাবেন।
প্রেসিডেন্ট অফিসের বাজেট এই বছর প্রায় ৩০ লাখ মার্কিন ডলার।
লাইবেরিয়ার অলাভজনক সংস্থা সেন্টার অব ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটির অ্যান্ডারসন ডি মিয়ামেন বলেছেন, প্রেসিডেন্টের বেতন হ্রাসের এই সিদ্ধান্ত ‘ভালো’।
তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘বেতন কমানোর পর এসব অর্থ কোথায় যাবে এবং কীভাবে সেগুলো জনগণের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে ব্যবহার করা হবে, সেটি স্পষ্টভাবে দেখতে পাওয়ার আশা করছি আমরা।’
উল্লেখ্য, রান অফ নির্বাচনে জর্জ ওয়েহকে পরাজিত করার পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন জোসেফ বোকাই। তিনি দুর্নীতি ও আর্থিক অব্যবস্থাপনা মোকাবিলার অঙ্গীকার করেছেন।
দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিজের সম্পদের তথ্য ঘোষণা করার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট বোকাই তার অফিসের অডিটের নির্দেশ দিয়েছেন। অবশ্য সেই অডিটের ফলাফল এখনও প্রকাশিত হয়নি। এছাড়া বোকাই জেনারেল অডিটিং কমিশন এবং লাইবেরিয়া দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করেছেন।
পূর্বসূরি ওয়েহের সরকার দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত ছিল এবং ব্যাপক ব্যয়ের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গিয়েছিল এবং এটিই দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছিল।