জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে যে রূপকল্পের কথা বলা হয়েছে তা যথাসম্ভব দ্রুত জাতির সামনে উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। পাশাপাশি প্রশাসনের সর্বস্তরে যে শ্লথগতি তা দুর করে অবিলম্বে সরকারের কার্যক্রমকে গতিশীল করারও আহ্বান জানিয়েছি দলটি।সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকেল ৪টায় বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে এ আহ্বান করেন দলটির নেতৃবৃন্দ।
দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, কিছুটা বিলম্বে হলেও জাতির উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রদত্ত ভাষণকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে এবি পার্টি। বর্তমান সরকার একটি ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে। যা অতীতের সকল ধরনের সরকারের চেয়ে ভিন্নতর। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দেশকে সামগ্রিকভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করার কারণে এই সরকারের উপর যে দায় দায়িত্ব এসেছে তা খুবই চ্যালেঞ্জিং। রাষ্ট্র মেরামত ও সংস্কার নিয়ে ছাত্র জনতার দেখা স্বপ্ন যদি বাস্তবায়ন করা না যায় তাহলে জাতি আমাদের কখনও ক্ষমা করবে না।একদিকে ভয়াবহ বন্যার ক্ষতি, সমন্বিত ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে সমন্বয়ের অভাব, অন্যদিকে প্রতিদিনই নিত্য নতুন দাবি নিয়ে বিভিন্ন রকমের রহস্যজনক সহিংস আন্দোলনের বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। মনে হচ্ছে সরকারকে বিব্রত ও ব্যর্থ করার জন্য পর্দার অন্তরালে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এবি পার্টি মনে করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের সমন্বয় না থাকলে গভীর সংকট সৃষ্টি হতে পারে।বক্তারা প্রধান উপদেষ্টাকে দ্রুত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরুর আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে যে রূপকল্পের কথা বলা হয়েছে তা যথাসম্ভব দ্রুত জাতির সামনে উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়ে এবি পার্টির নেতারা বলেন, প্রশাসনের সর্বস্তরে যে শ্লথগতি তা অবিলম্বে দুর করতে হবে। পুলিশ, বিচারাঙ্গণ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদসমূহে যোগ্য লোকদের পদায়ন করে সরকারের কার্যক্রমকে গতিশীল না করলে মানুষের মাঝে হতাশা ও অনাস্থার পরিবেশ তৈরি হতে পারে।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা একটি ভিশনারী বক্তব্য দিয়েছেন, আমরা আশা করি রাজনৈতিক দল গুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে তিনি বাস্তবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে। আপনারা আন্দোলন করেন কোনো সমস্যা নাই, কিন্তু শত শত জীবনের বিনিময়ে আমরা যে স্বৈরাচারকে হটিয়ে একটি বিপ্লবী সরকার প্রতিষ্ঠা করেছি, তাদেরকে বিব্রত করে বা ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা ভূলুণ্ঠিত করে প্রতি বিপ্লবের কোনও ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা যদি কেউ করে তাহলে সেটা আমরা ভালোভাবে নেব না। ইতোমধ্যেই পল্লীবিদ্যুতের কর্মচারীরা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। তারা সাট ডাউনের হুমকি দিয়েছেন। সরকারকে আমরা বলবো সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলবো আপনারা গণতান্ত্রিক পন্থায় দাবি দাওয়া করেন, কিন্তু পতিত স্বৈরাচারের লক্ষ্য বাস্তবায়নের হাতিয়ার হওয়ার চেষ্টা করবেন না। ছাত্র-জনতা এখনো মাঠে আছে, আমাদের লক্ষ্য অর্জনের আগ পর্যন্ত মাঠে থাকবো ইনশাআল্লাহ। কোনও ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না।
দলের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, সরকার উদারতার পরিচয় দিয়েছে। তারা কাজ করার চেষ্টা করছেন। আমরা সমর্থন করছি। আশা করি তারা বন্যার্তদের পুনর্বাসনে যথাযথ ভূমিকা রাখবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হাসান ও মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন।