জয়পুরহাট জেলা জজ আদালত ও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়োগপ্রাপ্ত চতুর্থ শ্রেণির বেশিরভাগ কর্মচারী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা বলে অভিযোগ উঠেছে। জয়পুরহাট আদালতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামে ব্যানারে করা মানববন্ধন থেকে এ অভিযোগ তোলা হয়।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে জয়পুরহাট আদালতের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়েছে। এতে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী ছাড়াও আদালতে চাকরি বঞ্চিত জয়পুরহাট জেলার কয়েকজন বাসিন্দাও অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জয়পুরহাট আইনজীবী সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম তরুণ, সাধারণ সম্পাদক শাহনুর রহমান শাহীন, প্রবীণ আইনজীবী হেনা কবির, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সালামত আলী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোজাহিদ আজিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল ইসলাম জনি, চাকরি প্রত্যাশী আব্দুল ওয়ারেছ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক আইন সচিব গোলাম সরোয়ারের নির্দেশে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে জয়পুরহাটের সাবেক জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ নুরুল হক জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পেশকার, জারিকারক, অফিস সহকারী, স্ট্যানোগ্রাফার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগপ্রাপ্তদের বেশির ভাগের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায়। সেই সময় জয়পুরহাটের বাসিন্দারা নিয়োগ ও ভাইভা পরীক্ষায় ভালো করেছিলেন। মেধা তালিকায় থাকার পর জয়পুরহাট জেলার বাসিন্দাদের কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এই দুই আদালত একটি মিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরিণত হয়েছে। তারা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দাদের চাকরি থেকে অপসারণ করে পুনরায় নিয়োগের দাবি জানান।
জয়পুরহাট আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক জনি বলেন, ২০২৩ সালে জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪২ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে ৩২ জন কর্মচারী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বাসিন্দা। নিয়োগপ্রাপ্ত অনেকেই লিখিত পরীক্ষাও দেননি। তারপরও চাকরি পেয়েছেন। সেই সময় আমরা ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারিনি। ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আমরা নতুন একটি বাংলাদেশ পেয়েছি। আমরা নতুন বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টার কাছে তদন্ত সাপেক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা বাসিন্দাদের চাকরি থেকে অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।
চাকরি প্রত্যাশী জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার কাজিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল ওয়ারেছ বলেন, আমি বেঞ্চ সহকারী পদে লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলাম। তখন জেলা ও জজের কাছে ফোন আসলো। আমাকে আর নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আদালতে কর্মচারী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
জয়পুরহাট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহনুর রহমান শাহীন বলেন, প্রতিটি জেলার নিয়ম আছে, যে জেলায় নিয়োগ সেই জেলার মেধাবীদের নেওয়া। কিন্তু সাবেক আইনমন্ত্রী আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে আদালতে তার নিজ এলাকায় লোকজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা দ্রুত তাদের অপসারণ চাই এবং নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া করার দাবি জানাই।