বকশিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয়ের বিজয়গাঁথা

Oplus_131074

মোহাম্মদ আলী : বাবা জীবদ্দশায় কোনোদিন মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেননি। কিন্তু, তার মৃত্যুর ৯ বছর পর তাকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন ছেলে। শুধু দাবি করেননি। রীতিমতো বাবাকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লিখিয়েছেন ও ভাতায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
দীর্ঘ ১৫ বছরের ক্ষমতায় এমন অনেক অসাধ্য সাধন করেছেন, বকশিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, মরহুম আঃ হামিদের ছেলে, মোঃ সাইফুল ইসলাম বিজয়।
জানা যায়, বকশীগঞ্জের নামাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মরহুম আব্দুল হামিদের ছেলে সাইফুল ইসলাম বিজয় একসময় বকশিগঞ্জ বাজারে বইয়ের দোকান করতেন। ২০০৮/৯ সালের দিকে বকশিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদে অধিষ্ঠিত হন। তারপর থেকে তার উত্থান শুরু। দীর্ঘ ১৪ বছরে ক্ষমতায় দল ও দলের নাম ভাঙ্গিয়ে তিনি কামিয়েছেন অর্থ, সম্পদ, নাম, যশ ও খ্যাতি। কমিটি প্রদান, টিআর কাবিখার দলীয় বরাদ্দ, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি ও নানাখাত থেকে অর্থ কামিয়েছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে জনমুখে। আর সে অর্থে গড়েছেন বকশিগঞ্জের প্রাণকেন্দ্রে বহুতল বাড়ি, মালিবাগে জমিসহ দোকানপাট, ব্র্যাক অফিসের সামনে দ্বিতল বাড়ি,পান হাঁটিতে জমিসহ দোকানপাট। এছাড়া ঢাকায় ও ময়মনসিংহে কিনেছেন ফ্ল্যাট বাড়ি। জেলাবাসীর সাথে যুক্ত হতে ৫ লাখ টাকায় কিনেছেন জামালপুর রিক্রিয়েশন ক্লাব লিমিটেডের সদস্য পদ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বকশিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন প্রবীণ রাজনীতিক জানান, গত ১৫ বছরে বকশিগঞ্জে আওয়ামী লীগ করে যারা লাভবান হয়েছেন তাদের অন্যতম সাইফুল ইসলাম বিজয়। সে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবি করলেও তার দুর্নীতির হাত থেকে রেহায় পায়নি স্বয়ং মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। সে সূর্য্যনগর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ কাদেরের বীর নিবাস নির্মাণ করতে গিয়ে তার বাড়িতে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত ইট ও পঁচা খোয়া ব্যবহার করেছে। যার কারণে কাদের ঘরে উঠার আগেই দেওয়ালে নোনায় ধরেছে, ছাদ চুইয়ে পানি পরেছে। এর প্রতিবাদে আঃ কাদের প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছিলেন।
বকশিগঞ্জ উপজেলার সূর্য্যনগর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা, মরহুম মোহাম্মদ আলীর ছেলে, শেখ মঞ্জিল ( ৬২ ) বলেন, বিজয় যতদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিল ততদিন দল ও দলের ক্ষমতাকে বিক্রি করেছেন। বিগতদিনে সে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে আমাদের গ্রামের একজন দিনমজুরকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বানিয়ে ছিলেন। শুধু তাকে নয়, টাকার বিনিময়ে সে অনেক অযোগ্য লোকদের সে নেতা বানিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তার বাবা আব্দুল হামিদ মেম্বার জীবদ্দশায় কোনোদিন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেননি। অথচ তার মৃত্যুর ৯/১০ বছর পর তার ছেলে বিজয় তার দলীয় ক্ষমতাকে ব্যবহার করে বাবাকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে।
সম্প্রতি, মাদারের চর গ্রামের আনিসুর রহমান বাদী হয়ে বকশিগঞ্জ থানায় তার বিরুদ্ধে একটি নাশকতার মামলা করেছেন। সে মামলায় তিনি এজাহারভূক্ত আসামি।
এব্যাপারে নাশকতার মামলায় পলাতক থাকায় চেষ্টা করেও বকশিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, মোঃ সাইফুল ইসলাম বিজয়ের মতামত যায়নি।