পাকিস্তানকে প্রতিশ্রুত ৬০ কোটি ডলারের ঋণ বাতিল করল বিশ্বব্যাংক

জাতীয় বাজেটের উন্নয়ন খাতের জন্য পাকিস্তানকে প্রতিশ্রুত ৬০ কোটি ডলারের ঋণ বাতিল করেছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বের বৃহত্তম এই ঋণদাতা সংস্থা এক বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করেছে যে চলতি অর্থবছরে পাকিস্তানকে আর কোনো প্রকার বাজেট বিষয়ক ঋণ দেওয়া হবে না।

দেশটির দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউন শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে যেসব শর্তের সাপেক্ষে পাকিস্তানকে এই ঋণের প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংক, সেসবের প্রায় কোনটিই পূরণ করতে পারেনি পাকিস্তানের সরকার।

বিশ্বব্যাংকের এই পদক্ষেপ অর্থ সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের জন্য একটি বড় ধাক্কা। কারণ বাজেট বিষয়ক ঋণপ্রাপ্তির পর নতুন আরও ২০০ কোটি ডলার ‍ঋণের জন্য আবেদন করার পরিকল্পনা ছিল ইসলামাবাদের; কিন্তু বাজেট ঋণ বাতিলের জেরে নতুন ঋণের জন্য আবেদনের পরিকল্পনাও কার্যত ভেস্তে গেল দেশটির।

পাকিস্তানের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি খাত উন্নয়নের জন্য প্রস্তাবিত এই ঋণ প্রদানের কথা ছিল বিশ্বব্যাংক। ২০২১ সালে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি উৎপাদন ও ব্যবহার সংক্রান্ত পাকিস্তানের সরকারি প্রকল্প অ্যাফোর্ডেবল অ্যান্ড ক্লিন এনার্জি প্রোগ্রামের (পেস) অনুমোদন দেয় বিশ্বব্যাংক। পাশাপাশি প্রকল্প গড়ে তুলতে প্রাথমিক ভাবে ১০০ কোটি ডলার ঋণ প্রদানের প্রতিশ্রুতিও দেয়।

সেই ঋনের প্রথম কিস্তি হিসেবে ইতোমধ্যে ৪০ কোটি ডলার পেয়েছেও পাকিস্তান। চলতি ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬০ কোটি ডলার আসার কথা ছিল।

তবে দ্বিতীয় কিস্তি প্রদানের আগে ইসলামাবাদকে বেশ কয়েকটি শর্ত দেয় বিশ্বব্যাংক। সেসবের মধ্যে একটি শর্ত ছিল— এই মুহূর্তে পাকিস্তানে যেসব বেসরকারি ও বিদেশি মালিকানাধীন কেন্দ্রগুলোর কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করছে পাকিস্তানের সরকার, সেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সাক্ষরিত চুক্তির অনুলিপি যেন বিশ্বব্যাংককে প্রদান করা হয়।

সিপিইসি নামের একটি চুক্তির আওতায় পাকিস্তানে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে চীন। সেই চুক্তি সম্পর্কেও জানতে চেয়েছিল বিশ্বব্যাংক। তবে চীনের আপত্তির কারনে সিপিইসি চুক্তি সম্পর্কিত কোনো তথ্য বিশ্বব্যাংককে প্রদান করেনি ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানে এই মুহূর্তে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৬৫ থেকে ৭০ পাকিস্তানি রুপি। ফলে দরিদ্র তো বটেই, সাধারণ মধ্যবিত্তেরও নাভিশ্বাস উঠছে এই অতিমূল্যের কারণে। দাম কমানোর জন্য ইসলামাবাদ বেসকরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এখনও কোনো ইতিবাচক ফলাফল আসেনি।

সূত্র : দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, এএনআই নিউজ