দুই বছরে দুইবার বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন মহিলা মেম্বার রোকশানা

মোহাম্মদ আলী ;ছিলেন বিধবা গৃহবধূ। ৭সন্তানের জননী। শাশুড়ির মৃত্যুকে পুঁজি করে আসেন জনপ্রতিনিধিত্বে। নারী ক্ষমতায় এসে দুই বছরের মাথায় দুইবার বসলেন বিয়ের পিঁড়িতে। এলাকায় সমালোচনার ঝড়, ক্ষুব্ধ পরিবার!
সম্প্রতি, ১১নং চরপুটিমারি ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্যা, রোকশানার এমন দায়িত্ব জ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ নিজের পরিবার, ভাঙছে অন্যোর সাজানো সংসার! দফায় দফায় বসছে শালিস বৈঠক।
জানা যায়, জেলার ইসলামপুর উপজেলার ১১নং চরপুটিমারি ইউনিয়নের ডিগ্রীরচর দক্ষিণ পাড়া নিবাসী মরহুম সেলিম এর স্ত্রী রোকশানা বেগম ছিলেন একজন সাধারণ গৃহিণী। তার ছিল ৭জন ছেলে মেয়ে। ছেলেদের বিয়ে করিয়েছেন। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। এরমধ্যে তার শাশুড়ী মুক্তা বেওয়া ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত চরপুটিমারি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৭ ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচিত হন। শপথ নেওয়ার কয়েক মাসের মাথায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন। ফলে তার আসনটি শূন্য হওয়ায় পড়ে। এর কয়েকমাস পর ২২ সালের নভেম্বর মাসে সে ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অন্যান্য প্রার্থীদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মরহুমা মুক্তা বেওয়ার পুত্রবধূ রোকশানা। শাশুড়ীর দোহাই দিয়ে ভোটাদের হাতে পায়ে ধরে সিম্পিথি ভোটে নির্বাচিতও হন তিনি। অতঃপর ওইবছরের ডিসেম্বরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে শপথ নেন তিনি। গাঁয়ের বঁধু আসীন হন নারী ক্ষমতায়নে। এরপর থেকে বিধবা গৃহবধূ রোকশানা মুক্ত বিহঙ্গী হয়ে উঠেন। তার স্বাধীনতা পাখা মেলতে থাকে। ২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে এসে লাজ লজ্জা উপেক্ষা করে পরিবারের অমতে ডিবালিয়া গ্রামের জনৈক সাবেক মেম্বারের ছেলে, ৪ সন্তানের জনক, মুলকেছের সাথে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে রোকশানা ও মুলকেছের সংসারে অশান্তির আগুন জ্বলে উঠে। রোকশানার ছেলে মেয়েরা মায়ের এ অনৈতিক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে মাকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ওদিকে মুলকেছের মেয়ের জামাই শ্বশুড়ের এ কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রীকে তালাক দেন। এই নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বে মুলকেছও তার স্ত্রীকে তালাক দেয়। এই নিয়ে এলাকায় দফায় দফায় শালিস বৈঠক হওয়ার পর মুলকেছকে ছাড়তে বাধ্য হন রোকশানা। কিন্তু, এর কয়েকমাস যেতে না যেতেই ২৫ সালের গোড়ার দিকে একই গ্রামের ইদুর ছেলে, কয়েক সন্তানের জনক, বিল্লালের সাথে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন বলে শোনা যাচ্ছে!
তার এ নতুন সংসারে এখন পর্যন্ত অটুট থাকলেও ভাঙ্গনের সুর বাজছে, বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এব্যাপারে চরপুটিমারি ইউপি চেয়ারম্যান সামছুজ্জামান সুরুজ মাষ্টারের মতামত জানতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। এসময়ে তার পরিষদের কয়েকজন ইউপি সদস্য জানান, রোকশানার ব্যক্তিগত ও পারিষাদিক আচার আচরণে আমরা অতিষ্ঠ এবং লজ্জিত। তার জন্য আমাদেরকে চারিদিক থেকে অভিযোগের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিচারক হয়েও তার জন্য আজ আমরা আসামি। আগে আমরা জনগণের বিচার শালিস করতাম, এখন জনগণ আমাদের বিচার শালিস করে। এমতাবস্থায় পরিষদের সম্মান ও ভাবমূর্তি রক্ষা আমরা তাকে অনাস্থা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলাম।
এব্যাপারে চরপুটিমারি ইউপি সদস্যা, রোকশানা বিয়ে করার কথা স্বীকার করে বলেন, একজন নারীর স্বামী না থাকলে কিছু পুরুষরা যখন তখন তাকে ঠুকর মারতে
চায়। তাই, ওইসব পুরুষদের হাত থেকে বাঁচতেই আমি বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছি। একটি গাছের নীচে আশ্রয় নিয়েছি বলতে পারেন। এখন যে যায় বলে বলুক। তাতে আমার কিছু আসে যায় না।