নিজস্ব সংবাদদাতা : জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী সেজে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এসময় রোগীদের খাবারসহ নানা অব্যবস্থাপনার চিত্র উঠে এসেছে।
গতকাল শনিবার ২৪ মে সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত টানা ৪ ঘন্টা অভিযান পরিচালনা করে দুদক জামালপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি দল।
এতে নেতৃত্ব দেন জামালপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ সহকারী পরিচালক মো: জিহাদুল ইসলাম। তার সাথে ছিলেন আরেক উপ সহকারী পরিচালক মো: আতিউর রহমান।
অভিযানের আগে দুই ঘন্টা সময় নিয়ে প্রথমে রোগী সেজে তথ্য সংগ্রহ করেন তারা। পরে অভিযানে হাসপাতালের প্রধান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেবাশীষ রাজ বংশী এবং আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. বিচিত্রা রানীকে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত পান তারা। এসময় দুদক কর্মকর্তাদের হাসপাতাল সংক্রান্ত সকল তথ্য দেন মেডিকেল অফিসার নুরে আলম সৈকত।
অভিযানে দেখা গেছে, হাসপাতালে আবাসিক রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত মুরগীর মাংস ২১০ গ্রামের পরিবর্তে ১১২ গ্রাম দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঔষধ বিতরনে যথাযথ রেজিস্ট্রার এন্ট্রি না করা ছাড়াও ঔষধ ও রোগীদের খাদ্য সরবরাহের ঠিকাদারের কার্যক্রমে দুর্নীতি ও গাফিলতির প্রমাণ পায় কর্মকর্তারা। হাসপাতালে ৭ জন ডাক্তার কর্মরত থাকার কথা থাকলেও অভিযানের সময় হাসপাতালে উপস্থিত পাওয়া যায় ৩ জন ডাক্তার। আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ বিচিত্রা রাণী ছুটিতে না থাকলেও তাকে বার বার খোঁজাখুজি করেও হাসপাতালে পাওয়া যায়নি।
জামালপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ সহকারী পরিচালক মো: জিহাদুল ইসলাম বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রোগী সেজে সেবাগ্রহীতা হিসেবে প্রথমে হাসপাতালে বিভিন্ন স্থানে পরিদর্শন করি। তারপর বিভিন্ন শাখায় গিয়ে আমরা অনিয়ম দেখতে পাই। এসব তথ্য কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরনের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
দুদকের জামালপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক কমলেশ মন্ডল বলেন, যেখানেই দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যাবে সেখানেই জামালপুর জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকার বিষয়ে সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেবাশীষ রাজ বংশী বলেন, তিনি ছুটিতে আছেন এবং ঢাকায় অবস্থান করছেন। কিন্তু জামালপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাঃ দেবাশীষের কোন ছুটির আবেদন তিনি পাননি । ফলে তাঁর ছুটি মঞ্জুরের প্রশ্নই আসেনা।
রোগী সেজে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুদকের অভিযান ॥ বেরিয়ে এলো নানা অনিয়ম
