শান্তি প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধ শেষ করার জন্য ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়কেই একে অপরের কাছে কিছু কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় সম্ভাব্য একটি চুক্তির ব্যাপারে তাদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করবেন তিনি। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
স্থানীয় সময় সোমবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, আগামী শুক্রবার আলাস্কায় প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠকটি হবে মূলত “অনুভূতি জানার বৈঠক”, যেখানে তিনি বোঝার চেষ্টা করবেন যে পুতিন কোনো চুক্তি করতে ইচ্ছুক কিনা।
তিনি জানান, মাত্র দুই মিনিটের মধ্যেই তিনি বুঝতে পারবেন অগ্রগতি সম্ভব কিনা।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছি এবং আমি তাকে বলব, আপনাকে এই যুদ্ধ শেষ করতে হবে। আপনাকে এটি শেষ করতে হবে।”
ট্রাম্প আরও বলেন, ভবিষ্যতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়েও একটি বৈঠক হতে পারে, যা তিনি, পুতিন ও জেলেনস্কিকে নিয়ে তিন পক্ষের বৈঠক হতে পারে। তিনি জানান, পুতিনের সঙ্গে তার আলোচনার পরপরই তিনি ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত বন্ধে দ্রুত যুদ্ধবিরতি ঘটানোই তার লক্ষ্য।
তবে ইউরোপীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, রাশিয়াকে বড় ধরনের ছাড় দেওয়া হলে ভবিষ্যতে পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য নিরাপত্তা সমস্যা তৈরি হতে পারে।
বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড দখল করে আছে, অন্যদিকে ইউক্রেনের দখলে রাশিয়ার কোনো ভূখণ্ড নেই বললেই চলে। ট্রাম্প বলেন, ভূখণ্ড ছাড় দেওয়ার বিষয়ে জেলেনস্কির অবস্থান তাকে “সামান্য বিচলিত” করেছে এবং তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভূখণ্ড বিনিময় ঘটবেই।
তিনি বলেন, “কিছু ভূখণ্ড বিনিময় হবেই।”
ট্রাম্প বলেন, “আমি রাশিয়ার মাধ্যমে এবং সবার সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, ইউক্রেনের ভালোর জন্যই এটি হবে”। তিনি বলেন, রাশিয়া “খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু ভূখণ্ড” দখল করেছে, তবে “আমরা সেই ভূখণ্ডের কিছু অংশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।”
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় এবং ভয়াবহ এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন রাশিয়ানদের বিতাড়িত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
রাশিয়া এই যুদ্ধকে তাদের নিরাপত্তার জন্য ইউক্রেনের পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়াকে হুমকি হিসেবে অভিহিত করে যুদ্ধের ন্যায্যতা প্রমাণ করছে। তবে কিয়েভ এবং এর পশ্চিমা মিত্ররা এই আক্রমণকে সাম্রাজ্যবাদী ধাঁচের ভূমি দখল বলে অভিহিত করছে।