জামালপুর জেলা বিএনপির সম্মেলন স্থগিত করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির দাবি জানালেন সিরাজুল হক ও শামীম আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসছে ২৩ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য জামালপুর জেলা বিএনপির সম্মেলন স্থগিত করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে সেই কমিটির মাধ্যমে জামালপুর জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন
জামালপুর জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজুল হক এবং জামালপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ।
১৬ আগস্ট, শনিবার দুপুরে জামালপুর শহরের বকুলতলা মোড় ও দয়াময়ী মোড়ে বিএনপি ও সকল অঙ্গ সংগঠন, জামালপুর জেলা ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে তারা এই দাবি জানান। একই দাবিতে তারা বকুলতলা থেকে দয়াময়ী মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিলও করেন তারা। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গদলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
সমাবেশের প্রধান অতিথি জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজুল হক বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার নেতৃত্বে আজকে দল খুই সুসংগঠিত। এই দলকে সুসংগঠিত করার যখন কার্যক্রম চলছে। তখন জামালপুর জেলা বিএনপির সম্মেলন নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। একটি সঠিক সম্মেলন হওয়ার জন্য আজকে প্রয়োজন একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি।
তিনি বলেন, জামালপুর জেলা বিএনপির কমিটি হচ্ছে দুই সদস্য বিশিষ্ট। সরিষাবাড়ীর শামীম তালুকদার যিনি ছয়মাসে একদিও আসেন না। জেলা বিএনপির সভাপতি হওয়ার পরও তিনি আবার সরিষাবাড়ী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। এরা দলকে কুক্ষিগত করে ফেলেছেন। যাতে করে আর নেতৃত্ব কেউ না পায়। আমরা চাই নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাতে হবে। সকলকে নেতৃত্বের সুযোগ করে দিতে হবে। আজকে সবার দাবি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করার। সম্মেলন সম্মেলন খেলা চলবে না।
সিরাজুল হক বলেন, বিএনপি হল জনগণের দল। এই দলের মধ্যে যারা সুশৃংখল নেতৃত্বে আছেন তাদেরকে আমাদের প্রয়োজন। যেইই বর্তমান কমিটির বিরেধিতা করেন। তাকেই লাথি মেরে সরিয়ে দেন। এটা কারও বাপের দল না। এটা কোন সম্পত্তি না। কাজেই যারা কাজ করবেন। তারাই নেতৃত্ব পাবেন। দলের প্রকৃত সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আমরা নতুন নেতৃত্ব দেখতে চাই।
সমাবেশের সভাপতি জামালপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ বলেছেন, জামালপুর জেলা বিএনপি একটি প্রহসনমূলক সম্মেলন করার লক্ষ্যে কাজ করছেন। যা জামালপুরবাসী জানে না। আজকে তারা সম্মেলন জামালপুরের শেষ সীমানায় নিয়ে গেছেন। শেষ সীমানায় কেন? টাঙ্গাইলে করলেই তো পারেন। জামালপুর স্টেডিয়ামকে বাদ দিয়ে। সিংহজানী হাইস্কুল মাঠকে বাদ দিয়ে আপনারা সম্মেলন করছেন ধানের ক্ষেতে। এই প্রহসনমূলক সম্মেলন জেলা বিএনপির তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ চায় না। জামালপুরবাসীও চায় না।
তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শামীম আহমেদ বলেন, আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আস্থা রেখেছি। অবিলম্বে জামালপুর জেলা বিএনপি ভেঙে দিয়ে একটি সম্মেলন প্রস্তুতিমূলক কমিটি করে দেন। তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সকলের অংশগ্রহণ করিয়ে প্রতিযোগিতামূলকভাবে জামালপুর জেলা বিএনপির একটি নতুন কমিটি হোক। এটাই জামালপুরবাসী আশা করেন। আমাদের প্রিয়ে নেতা তারেক রহমান সাহেব জামালপুরে দেখেন কি হচ্ছে। আওয়ামী লীগের আমলে জেলা বিএনপির যারা দায়িত্বে রয়েছেন। তারা কখন কোথায় কিভাবে আন্দোলন করেছেন। আপনি তদন্ত করে দেখেন। তারা হয় গেটপাড়ে। শহরের এক মাথায় বাসস্ট্যান্ডে।
তিনি আরও বলেন, একটি কথা জামালপুরবাসী জানতে চায়। মির্জা আজমের ঠিকাদারি কাজকর্ম, ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীর মত ঠিকাদারি কাজকর্ম, তার বাড়ি, ব্যবহৃত গাড়ি, সাবেক মেয়র ছানোয়ার হোসেনের জমি দখল। এগুলো কার হাতে কার কাছে ন্যস্ত হয়েছে। আমাদের আস্থা, বিশ^াস শেষ আশ্রয়স্থল তারেক রহমান সাহেবের কাছে। আপনি প্রতিনিধি পাঠিয়ে সরজমিনে জামালপুরে তদন্ত করে দেখেন। জামালপুর জেলা বিএনপি কিভাবে চলছে।
শামীম আহমেদ বলেন, জামালপুর জেলা বিএনপির সম্মেলন করতে দেওয়া যাবে না। যা হবার হবেই। তৃণমূলের নেতারা আন্দোলন করার আগেই জামালপুরবাসী তা করবে। পারলে ঠেকায়েন।
জামালপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান জিলানীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণ চন্দ্র ম-ল, জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ জাকির হোসেন, সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের সাবেক এজিএস বিএনপিনেতা মহব্বত হোসেন, বিএনপিনেতা ফিরোজ আহাম্মেদ, জেলা কৃষকদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলতাফ হোসেন, মেষ্টা ইউনিয়ন বিএনপিনেতা গোলাম মওলা, বিএনপিনেতা আজম খান, সাবেক ছাত্রদলনেতা ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ হোসেন, জেলা যুবদলের সদস্য খায়রুল ইসলাম লিয়ন, শহর যুবদলের সদস্য সচিব জিয়াউল হক জিয়া, শহর যুবদলের যুগ্মআহবায়ক গোলাম রব্বানী জনি, যুবদলনেতা রানা ম্যানসন, যুবদলনেতা রাশেদুল ইসলাম টুটুল, যুবনেতা সাইফুল ইসলাম রবিন, সাবেক ছাত্রদলনেতা পারভেজ খান, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাগর ও সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক নয়ন সরকার, সাবেক ছাত্রদলনেতা এমদাদুল চৌধুরী তূর্য্য ও ইফতেখার সাগর, জিয়া সাইবার ফোর্সের জেলা শাখার সভাপতি শুভ পাঠান প্রমুখ।