সায়ত্ত্বশাসন আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত নিটারের শিক্ষার্থীরা

বাংলাদেশের চার সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ—ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, বরিশাল ও সিলেট—দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকট ও একাডেমিক অচলাবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এক দফা দাবি তোলে: BIT আদলে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপান্তর।

টানা আন্দোলন, সড়ক অবরোধ, ঢাকামুখী পদযাত্রা এবং অবশেষে আমরণ অনশনের মুখে সরকার শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানায়। ১৪ আগস্ট একটি নিরপেক্ষ ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। যা আগামী ১–৩ মাসের মধ্যে এ কমিটি চার কলেজের স্বায়ত্তশাসনের যৌক্তিকতা যাচাই করে প্রতিবেদন দেবে। ঢাবি ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের কোনো প্রতিনিধি কমিটিতে থাকবে না। অন্তবর্তীকালীন সরকারের মেয়াদকালেই এ প্রতিবেদন অনুযায়ী সমাধান দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে।

আন্দোলনের সরাসরি অংশীদার না হয়েও বিরূপ প্রভাব পড়েছে ঢাবি প্রযুক্তি অধিভুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে। বিশেষ করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ (নিটার) সিএসই ও ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীরা টানা দুই মাস ধরে ক্লাস ও পরীক্ষার বাইরে আছেন।

নিটার শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, অন্যান্য বিভাগে পাঠদান ও পরীক্ষা স্বাভাবিকভাবে চললেও প্রযুক্তি বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ। সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায়, যা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত। ফলে একই প্রতিষ্ঠানের এক বিভাগের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলেও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছেন।

একজন শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“আমরা আন্দোলনে ছিলাম না, তবুও কেন আমাদের পড়াশোনা বন্ধ থাকবে? দুই মাসে অনেকটা পিছিয়ে গেছি, অথচ অন্যরা এগিয়ে যাচ্ছে।”

চার সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা আপাতত সমঝোতার ফলে আন্দোলন স্থগিত করলেও, ঢাবি প্রযুক্তি অধিভুক্ত নিটার ও শ্যামলী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা এখনও অচলাবস্থায়। তাদের প্রশ্ন—কতদিন এভাবে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে?