দুই শতাব্দীর জীবন্ত কিংবদন্তী মোঃ আবুল হোসেন

মোহাম্মদ আলী ; আমাদের দেশের মানুষের ৬৫ বছরের গড় আয়ূতে যখন ৪০/৫০ বছরেও অনেকে চলে যাচ্ছেন পৃথিবী ছেড়ে। তখন স্ত্রী সন্তানদের সাথে ১শ ২১ বছর জীবিত থাকা নিঃসন্দেহে স্রষ্ঠার আশির্বাদ ও মানবজাতি জন্য গর্বের বিষয়। মোঃ আবুল হোসেন সেই জীবন্ত কিংবদন্তীদের একজন। যিনি দুই শতাব্দীর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্বাক্ষী।
জামালপুর জেলার পাথালিয়া গ্রামের গোয়াবাড়িয়ার মরহুম কছর সেক এর ছেলে মোঃ আবুল হোসেন। ৪ভাই ৬ বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। আবুল হোসেন একসময় জামালপুর পৌরসভায় চাকরি করতেন। তিনি ঠিক কবে জন্মগ্রহণ করেছেন তার দালিলিক সঠিক হিসাব না থাকলেও তাঁর নিজের হিসাব ও ঐতিহাসিক ঘটনা মতে, তাঁর বয়স আজ ১শ ২১ বছর।
বয়সের প্রমাণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, যখন জামালপুর থেকে পাথালিয়া হয়ে ( কোর্ট স্টেশন ) বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত রেললাইন হয় তখন আমি তা দেখেছি। ইতিহাস মতে, জামালপুর থেকে বাহাদুরাবাদ রেললাইন স্থাপিত হয়েছিল ১৯১২ সালে। সেই হিসেবে তখন যদি তাঁর বয়স ৮ বছর হয় তাহলে আজ তাঁর বয়স দাঁড়ায় ১শ ২১ বছরে।
এতোবছর বয়সে এসেও তাঁর স্মৃতিশক্তি এখনো প্রখর। ১শ ১৩ বছর আগে রেললাইন স্থাপন ছাড়াও মনে তাঁর আছে শৈশব ও যৌবনের অনেক স্মৃতি। মনে আছে সহপাঠী ও খেলার সাথীদের নামও। পানি পথের যুদ্ধ কতবার, কার সাথে কার হয়েছিল? কে জয়ী হয়েছিল? কে হেরেছিল? সেই ইতিহাস তাঁর এখনো অন্তস্থ। এছাড়াও আজকের শতভাগ মুসলমানের গ্রাম পাথালিয়ায় একসময় হিন্দুদের বসতি ছিল সেটাও তাঁর স্পষ্ট মনে আছে।
স্মৃতির জোর থাকলেও দেহের তেমন জোর নেই। এখন তিনি শারিরীক ভাবে খুবই দুর্বল। কুঁজো হয়ে পড়েছেন। কথায় অস্পষ্টতা ও জড়তা চলে এসেছে। একা একা আর চলতে ফিরতে পারেন না। খাওয়া গোসল করিয়ে দিতে হয়। বিছানাতে প্রস্রাব পায়খানা করে ফেলেন। স্ত্রী তছিরনই এখন তার চালিকাশক্তি। একমাত্র অবলম্বন।
আবুল হোসেন তাঁর পরিবারের অহঙ্কার। দাম্পত্য জীবনে তিনি স্বস্ত্রীক ৪ সন্তানের জনক। স্ত্রীর ছায়া ও সন্তানের বটবৃক্ষ হয়ে আরো অনেক দিন তিনি বেঁচে থাকবেন, এমনটাই আশা পরিবারের সবার।