অপরাজিতা অর্পা (সাভার প্রতিনিধি) ঢাকা: রাজধানীর মিরপুর-১ এর ৮ নং ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে ইসলামী ছাত্র শিবির এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘ইসমাইল আল-জাজারি রোবোটিক্স ফেস্ট ২০২৫’ এ নিটারের শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবনী প্রকল্প “CLKBX Automated Coffee Vending Machine” প্রদর্শন করে দেশের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিযোগিতায় নজর কেড়েছে।
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী তাঁদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি প্রকল্প নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। সারাদিনব্যাপী এই আয়োজনে লাইন ফলোয়িং রেস, রোবো সকার, মিনি সকার এবং প্রোডাক্ট ও প্রজেক্ট শোকেসসহ নানা প্রতিযোগিতায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। এই জমজমাট প্রতিযোগিতার মধ্যেই বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিটারের শিক্ষার্থীদের তৈরি স্বয়ংক্রিয় কফি প্রস্তুতকারী যন্ত্র “CLKBX Automated Coffee Vending Machine”।
সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ও ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) প্রযুক্তি সমৃদ্ধ এই মেশিনটি শিক্ষার্থীদের নিজস্ব গবেষণা, উদ্ভাবনী চিন্তা এবং হার্ডওয়্যার–সফটওয়্যারের সমন্বয়ে নির্মিত। মেশিনটি অর্ডার গ্রহণ থেকে শুরু করে কফি প্রস্তুত ও পরিবেশন পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম। রিয়েল-টাইম তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, সেন্সর-ভিত্তিক সেফটি ব্যবস্থা এবং OLED ডিসপ্লের মাধ্যমে ব্যবহার–বান্ধব ইন্টারফেস প্রদানের মতো বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রদর্শনীতে উপস্থিত বিচারক ও দর্শনার্থীদের কাছ থেকে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে প্রকল্পটি। প্রযুক্তিগত দক্ষতা, সৃজনশীলতা এবং ব্যবহারিক গুরুত্ব বিবেচনায় এই উদ্ভাবনী প্রজেক্টকে বিচারকমণ্ডলী দ্বিতীয় রানার-আপ হিসেবে ঘোষণা করেন।
প্রকল্পটি উদ্ভাবন ও নির্মাণ করেন নিটারের শিক্ষার্থী মো: ফরহাদ হোসেন মুন, হাসিবুল হাসান মুবিন, মো: মাহমুদুল ইসলাম, মো: আম্মার বিন মহসিন এবং মোহাম্মদ আলী। প্রদর্শনীতে তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ফাহিম আহমদ ওসমানী, আব্দুল্লাহ আল মনসুর জিদান, মো: সাদিকুর রহমান, মো: ওয়াহিদ ফারহান এবং মীর আবু কাশেম। দলীয় সমন্বয় ও নেতৃত্বের মাধ্যমে তাঁরা প্রকল্পটির মূল প্রযুক্তিগত দিক দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করেন।
প্রকল্পের কর্ণধার মো: ফরহাদ হোসেন মুন জানান, প্রযুক্তি কখনো কর্মসংস্থান কমিয়ে দেয় না, বরং নতুন দক্ষ মানবসম্পদের চাহিদা তৈরি করে। তিনি মনে করেন, বিশ্ব প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও দ্রুত অটোমেশন, রোবোটিক্স ও স্মার্ট সিস্টেমের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী দক্ষতা দেশের এই অগ্রযাত্রাকে আরও ত্বরান্বিত করতে পারে।
ফেস্টে আগত দর্শকরা জানান, এ ধরনের প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে প্রযুক্তি শেখার সুযোগ সৃষ্টি করে এবং উদ্ভাবনী চিন্তা বাড়িয়ে দেয়। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী বছর আরও বিস্তৃত পরিসরে ও আরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে রোবোটিক্স ফেস্টকে আরও সমৃদ্ধভাবে আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
