নকলা সংবাদদাতা : শেরপুরের নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে প্রতিনিয়তই রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তাই হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় শয্যাসহ জনবল বৃদ্ধি প্রয়োজন। জানা গেছে ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে যে পরিমাণ জনবল থাকার কথা আছে তন্মধ্যে ৫০ টি পদ এখনো শূন্য রয়েছে। ১ শত ঊনষাট জনের জনবল নিয়ে হাঁটি হাঁটি পাঁ পাঁ করে চিকিৎসা সেবা দিয়ে চলছে নকলা উপজেলা হাসপাতাল।
এরপর ও বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রের তুলনায় পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী নকলা উপজেলা হাসপাতালের পরিবেশ অনেক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং চিকিৎসা সেবার মান অনেক উন্নত। প্রয়োজনীয় জনবল থাকলে সুস্থ্যভাবে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া যেত বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রধান সহকারী আবু তারেক মোঃ মোতাসিন বিল্লাহ জানায় “ প্রয়োজনীয় জনবলই একটি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের চাবি কাঠি।
হাসপাতালটিতে বিভিন্ন বিভাগে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তাই বর্তমান জনবল দিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করা সত্যিই দূরহ ব্যাপার। এমতাবস্থায়, যথাযথ কর্তৃপক্ষ অত্র হাসপাতালের সকল বিভাগের জনবল বৃদ্ধি করা আবশ্যক, শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি করে হাসপতালটির চিকিৎসা সেবা বেগবান করা প্রয়োজন বলে জানায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। তাঁর মতে, হাসপাতালটিতে একজন সার্জারী কনসালটেন্ট পদায়ন করা হলে অপারেশন থিয়েটারটি চালু করা সম্ভব হতো। কাঁটা- ফাঁড়াসহ যে কোন প্রকার রোগীর চিকিৎসার জন্য সূদূর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয়। যা এ উপজেলার মানুষের জন্য কষ্টের ব্যাপার। অপারেশন থিয়েটারটি চালু হলে উপকৃত হত নকলাবাসী।হাসপাতালে চলমান দুটি ভবন রয়েছে । তন্মধ্যে একটি ভবন পুরাতন যার প্লাস্টারগুলো খসে পড়ছে । ইহা চিকিৎসক তথা রোগীদের চলার পথে বিপদ বয়ে আনতে পারে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে হাসপাতালটিতে সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা উন্নত বেড, সরঞ্জামাদি, ঔষধপত্রাদীসহ সকল প্রকার সেবার সুফল ভোগ করছে এ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। হাসপাতালটিতে আদি যুগের একটি এক্ররে মেশিন থাকার কারণে রোগীদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে বাহিরে বিভিন্ন ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে ডিজিটাল মেশিনে এক্্ররে করে সেবা নিচ্ছে। যা গ্রামের অসহায় মানুষের ভোগান্তি স্বরূপ। একজন নবাগত ফিজিওথেরাপিষ্ট (মোস্তাফিজুর রহমান) জানায় , চলতি মাসে এ বিভাগটি হাসপাতালে চালু হয়েছে। বর্তমানে স্ট্রোক , মুখ বাকা হওয়া, শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ- প্রতঙ্গের ব্যাথা, মহিলাদের কলোজিক্যাল সমস্যা ইত্যাদি নানা প্রকার ব্যাথা নাশক বিষয়ে সেবা তিনি দিবেন বলে জানিয়েছেন এ প্রতিনিধিকে।গত সেপ্টেম্বর মাসের জরিপ অনুযায়ী দেখা যায় যে, হাসপাতালটির বিভিন্ন দপ্তর হতে ২১ হাজার ৮ শত ৭৪ জন রোগী সেবা নিয়েছে।প্যাথলজি বিভাগে ৩ হাজার ৮ শত ২৮ জন রোগী এবং এক্্ররে, আলতা ,ইসিজি, বিভাগে মোট ২৮০ জন রোগীর পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানায়, প্যাথলজিষ্ট আবু কাউসার বিদ্যুৎ। এছাড়া ও বৈকালিক চেম্বার হিসেবে রোগী দেখেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কর্তব্যরত ডাক্তারগণ। এতে চিকিৎসা সেবার মান এ হাসপাতালে দিন দিন বেড়েই চলছে।গত মাসে নরমাল ডেলিভারির সংখ্যা এ হাসপাতালে প্রায় ১০০ জনের মত হয়েছে। মহিলাদের জরায়ু মুখের ক্যান্সার পরীক্ষা করে সেবা দেওয়া হয়েছে ৫০ এর অধিক রোগীকে । ফিজিওথেরাপি সেবা, মনো চিকিৎসা কেন্দ্র এবং টেলি মেডিসিন ৩ টি বিভাগের হাসপাতালের একেবারে নতুন সংযোজন। বিষয় গুলি জানার পর ক্রমেই রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানায় , এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ ও গরীব শ্রেণীর।শেরপুর সদর বা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অধিক অর্থ ব্যায়ে চিকিৎসা সেবা নেয়া তাদের পক্ষে কষ্টকর। তাই তারা হয়ত স্থানীয় হাসপাতাল হিসেবে এই হাসপাতলেই ভীড় জমায়। তিনি আশা করেন দক্ষ ও পর্যাপ্ত জনবলের মাধ্যমে উপজেলা বাসীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা যাবে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি একান্ত কাম্য।