Thursday, May 9, 2024
Homeদেশজুড়েবরিশালে আ.লীগের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছেন : রিপন

বরিশালে আ.লীগের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছেন : রিপন

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বরিশাল-৫ (সদর) আসনে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিপন। একই সঙ্গে সরকারি এজেন্সির গোয়েন্দারা তার কর্মীদের বাসায় বাসায় গিয়ে নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে ভীতির সঞ্চার করছেন।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন সালাউদ্দিন রিপন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিপন বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের কর্মী-সমর্থকরা আমার নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন। তারা আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। আমার কর্মীদের মারধর ও নারী কর্মীদের শ্লীলতাহানি করেছেন। আমার প্রচার মাইক ভাঙচুর করেছেন। এতে করে দিনে দিনে বরিশালে নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চাইছে আমি যেন নির্বাচনের মাঠ থেকে উঠে যাই।

তিনি বলেন, ২৬ ডিসেম্বর বিকেলে বুখাইনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে উঠান বৈঠক শেষে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম মাস্টারের নেতৃত্বে নৌকার সমর্থকরা আমাকে লাঞ্ছিত করে এবং হত্যার হুমকি দেয়। তারা আমার নেতাকর্মীদের মারধর করে। ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ফরেস্টার বাড়ি আমার নির্বাচনী কার্যালয়ে ঢুকে নৌকা প্রতীকের কর্মী রেজানুর রহমান নিয়ন ট্রাক প্রতীকের আমার এক নারী কর্মীকে শ্লীলতাহানি র চেষ্টা চালায়। ওখানে আমার কর্মীদের মারধর করে। এতে আমার কর্মী নাজমুল ও আরিফ হোসেন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিন ২২ নম্বর ওয়ার্ডে আমার প্রচারণার মাইক ছিনিয়ে নেয়, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে, মাইক ভাঙচুর চালায়। প্রচারণার সময় কর্মীদের মারধর করে।

সালাউদ্দিন রিপন বলেন, আমার নির্বাচন করায় ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মুসলিম গোরস্তান রোড এলাকার বাসিন্দা এক নারী সমর্থককে আওয়ামী লীগ নেতা শাহরিয়ার সাচিব ওরফে পন্ডিত রাজিব হুমকি দিয়েছেন ওই নারীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার। ওইদিন বিকেলে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝড়ঝড়িয়া তলা ও কাশিপুরের পূর্ব বিল্ব বাড়ি এলাকায় আমার দুই কর্মীকে মারধর করা হয়। এছাড়া ঝড়ঝড়িয়া তলা এলাকার আমার কর্মী দুলাল সরদারকে মারধর করে নৌকা প্রতীকের কর্মী শাকিল। সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিল্ব বাড়ি এলাকায় কাশিপুর ইউনিয়নের মেম্বার ও নৌকার কর্মী মাসুম হাওলাদার আমার কর্মীকে হত্যার হুমকি দেয়। নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রূপাতলী এলাকায় আমার নির্বাচনী প্রচারণার মাইক ভাঙচুর করে, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। তাছাড়া পুরো সংসদীয় আসনে যেসব স্থানে আমার পোস্টার টানানো হয় তা নৌকার কর্মীরা কেটে-ছিঁড়ে ফেলে।

তিনি বলেন, প্রতিটি ঘটনা আমি তাৎক্ষণিক প্রশাসন, নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটিকে জানিয়েছি। আজকে রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। আমি চাই সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটের মাধ্যমে সদর আসনের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হোক। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের পরিবেশ ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে।

সালাউদ্দিন রিপন বলেন, প্রতিদিনই আমার এবং আমার কর্মীদের ওপরে হামলা হচ্ছে। আমাকে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরানোর বিভিন্ন কৌশল আঁকা হচ্ছে। সরকারি এজেন্সির গোয়েন্দারা গিয়ে বাসায় বাসায় আমার কর্মীদের নাম ঠিকানা নিচ্ছে। আমাকে কোথাও অফিস নিতে দেওয়া হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।

তিনি বলেন, আমি দুঢ় প্রতিজ্ঞ পরিস্থিতি যত ঘোলাটে করুক আমি নির্বাচনের মাঠ থেকে সড়ে দাঁড়াবো না, যদি না আমার মৃত্যু হয়।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিপনের দেওয়া অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

এ দিকে বুধবার দুপুরে নগরীর কাকলীর মোড় এলাকায় গণসংযোগ করেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নৌকার কর্মীদের ওপর যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা মিথ্যা ও মনগড়া। কেউ বলতে পারবে না আমি কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি। সন্ত্রাস করেছি। মূলত কোনো কোনো প্রার্থী বাড়তি সুবিধা পেতে এমন মনগড়া অভিযোগ তুলছেন।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর

Most Popular

Recent Comments