হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় দ্রুত বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন রহমতপুর এলাকার বাসিন্দা তানজিলা আক্তার। হাসপাতালের টিনশেডের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বেডগুলো আগে থেকেই পূর্ণ থাকায় পাটি বিছিয়ে মেঝেতে থাকতে হচ্ছে তাকে। তানজিলা বলেন, হাসপাতালে অনেক ডায়রিয়া রোগী কিন্তু রোগীদের থাকার মতো পরিবেশ নেই। সবাই গাদাগাদি করে থাকছে। দুই দিনে যা দেখছি তাতে এখানে থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরা সম্ভব না।
তার কথায় যুক্ত হন তারই স্বজন মারুফ হোসেন। তিনি বলেন, রোগীরা বেড আর মেঝ মিলিয়ে গাদাগাদি করে থাকলেও সাহায্যকারী স্বজনদের থাকতে হয় বাইরে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডটিতে বারান্দাও নেই যে সেখানে ঘুমাবো। কষ্টে কাটিয়েছি একটা রাত।
এমন তথ্যই জানা গেলো বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগ থেকে জানা গেছে, এক সপ্তাহে ৯৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে। হাসপাতালটিতে অনুমোদিত ২০ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ড থাকলেও ১২ শয্যা নিয়ে বর্তমানে কাজ চলছে। এই ১২ শয্যার বিপরীতে ২১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। অর্থাৎ বেডের বাইরে ৯ রোগী মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের প্রত্যেককেই আইভি স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।
রোগী আরাফাত হোসেন বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের মেঝে শুয়ে আছি। মেঝে অনেক ঠান্ডা। এই সময়ে ঠান্ডার রোগে আক্রান্ত হওয়া অস্বাভাবিক নয়। রোগীরা মোটামুটি সুস্থ হলেই ছাড়পত্র দিয়ে দেয় হাসপাতাল থেকে
বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল বলেন, ভবনের কাজ চলমান থাকায় ২০ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ডটি চারটি বেড প্রস্তুত ছিল। কিন্তু গত ডিসেম্বরে হঠাৎ করেই ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে আরও আটটি বেড সংযুক্ত করা হয়েছে। শীতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মেঝেতে রেখেই চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এই হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৫১৮ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। ২০২৩ সালে যে সংখ্যা ছিল মাত্র ২৬১ জন।