Saturday, May 4, 2024
Homeদেশজুড়েজেলার খবরভোলায় ১২ হতদরিদ্রকে রিকশা দিলো কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশন

ভোলায় ১২ হতদরিদ্রকে রিকশা দিলো কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশন

ভোলায় অসহায় দরিদ্র ও অসচ্ছল পরিবারকে স্বাবলম্বী করার লক্ষে ১২ জন হতদরিদ্রকে বিনামূল্যে রিকশা দেওয়া হয়েছে। শনিবার ভোলা ইলিশা সড়কের পাশে ফাউন্ডেশনটির নিজস্ব কার্যালয়ের সামনে দাতব্য প্রতিষ্ঠান কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশন তাদের মাঝে এসব রিকশা বিতরণ করা হয়েছে। 

এর আগেও দুই ধাপে ২৪টি রিকশা দিয়েছে ফাউন্ডেশনটি। এ নিয়ে মোট ৩৬ জনকে রিকশা দেওয়া হলো। সকালে রিকশা বিতরণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান। 

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মামুন-অর রশিদ, ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম ও ভোলা প্রেসক্লাবের সম্পাদক অমিতাভ রায় অপু।
dhakapost.com

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশনের সদস্য সুলতান মাহমুদ মঞ্জিল ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইশতিয়াক বাবু। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের সদস্য আলতাজুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ জাহানজেব আলম টিটব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাঞ্চন ফাতেমা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য আশরাফুল হক সোহেল প্রমুখ। 

এসময় স্থানীয় দাতব্য প্রতিষ্ঠান কাঞ্চন ফাতেমা ফাউন্ডেশন উদ্যোগে অসহায় ১২টি পরিবারের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশার চাবি হস্তান্তর করেন জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান। রিকশা পেয়ে দারুণ খুশি উপকারভোগী পরিবারগুলো।

কাঞ্চন ফাতেমা ফাউন্ডেশন ২০১৮ সাল থেকে ভোলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দরিদ্র অসহায় মানুষকে স্বাবলম্বী করার জন্য রিকশা, ভ্যানগাড়ি, সেলাই মেশিন, গরু, ঈদ উপহার, চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করে আসছে। 

রিকশা পাওয়া মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বলেন, নদীতে আমাকে ৩/৪ ভাঙা দিয়েছে। পরিবার নিয়ে কোনোরকম বেড়িবাঁধের পাড়ে আশ্রয় নিয়েছি। সংসার চালানোর জন্য বাংলা রিকশা চালিয়ে কোনো রকম ভাড়া মেরে সংসার চালাতাম। বাংলা রিকশার কারণে অনেকে আমার রিকশায় উঠতো না। ফলে তিনবেলা ঠিকমতো খেতেও পারতাম না। এখন কাঞ্চন ফাতেমা ফাউন্ডেশন থেকে আমাকে ব্যাটারিচালিত রিকশা দিয়েছে। এই রিকশা চালিয়ে আমি এখন আয় করবো এবং তা দিয়ে সংসার চালাবো। আশা করি আগের থেকে বেশি প্যাসেঞ্জার পাবো। 

ভোলার ধনিয়া এলাকার নবীপুরের রিকশার ড্রাইভার সোপান বলেন, আগে ভাড়া গাড়ি চালিয়েছি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কামাই করছি। তাতেও কষ্ট হয়ে গেছে সংসার চালাইতে। এখন ব্যাটারি চালিত রিকশার মাধ্যমে কামাই করে পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারমু। 

ভোলার জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন, কাঞ্চন ফাতেমা ফাউন্ডেশন যেই উদ্যোগটি নিয়েছে এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। সরকারের পাশাপাশি এই ধরনের সামাজিক কার্যক্রম সাধারণ মানুষকে নিরাপদ বেষ্টনীর মধ্যে নিয়ে আসে। আমরা আশা করি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান একযোগে কাজ করলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে পারবো এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো। 

ভোলার সমাজসেবার উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, সমাজসেবা সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করে। কাঞ্চন ফাতেমা ফাউন্ডেশন যে কাজটি করছে সেটি সমাজসেবার কাজই করছে। তাদের কাজের মাধ্যমে সমাজের পিছিয়েপড়া নিম্মআয়ের মানুষ কিছুটা স্বস্তি নিয়ে বসবাস করতে পারে। 

ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইশতিয়াক বাবু বলেন, সমাজের অসহায় মানুষদের স্বাবলম্বী করতে কাজ করে যাচ্ছি। এর ধারাবাহিকতা আজ ১২ জন অসস্বচ্ছল মানুষের মাঝে রিকশা বিতরণ করা হলো। আমরা আশা করছি এই অটোরিকশা যারা পেয়েছে তারা রিকশা চালিয়ে স্বাবলম্বী হবে। তারা ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারবে। ভবিষ্যতেও আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

Most Popular

Recent Comments