সম্প্রতি সারা দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কারণ দেখিয়ে বাজারে বাড়তি যাচ্ছে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম। পাশাপাশি, আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে গরু, খাসির মাংসের দাম। ক্রেতাদের অভিযোগ, উপলক্ষ্য ছাড়া গরুর মাংস কেনা সম্ভব হয় না। এর ওপর ইচ্ছামতো মুরগির দাম বাড়িয়ে দেয় অসাধু ব্যবসায়ীরা। এমন চলতে থাকলে মাংসের চাহিদা মেটাতে পারবে না নিম্নআয়ের মানুষেরা।
শুক্রবার (১০ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতাদের এমন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
আজকের বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। এছাড়া, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি দেশি মুরগি আগের বাড়তি দামেই ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৮০ টাকা এবং মানভেদে প্রতি কেজি খাসির মাংস ৯০০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর মহাখালী বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী তৌহিদুল ইসলাম। ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য মুরগির যে দাম, তাতে মুরগি কেনা তো দূরে থাক, হাতই দেওয়া যায় না। সাধারণ মানুষ মাংসের চাহিদা মেটানোর জন্য ব্রয়লার মুরগির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমান বাজারে সেই ব্রয়লার মুরগির দামও বাড়তি যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ২২০ টাকা কেজি দরে একটি দেড় কেজি ওজনের ব্রয়লার কিনলাম। আসলে ব্রয়লার মুরগির দাম তো এত হওয়ার কথা নয়। যখন যেভাবে ইচ্ছা, ব্যবসায়ীরা এর দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ সাধারণ ক্রেতার কথা ভেবে বাজার মনিটরিংয়ের কোনও উদ্যোগ দেখি না। এত দাম দিয়ে সাধারণ নিম্নআয়ের ক্রেতাদের ব্রয়লার মুরগি কিনে খাওয়া সম্ভব নয়।
এদিকে, মালিবাগ বাজার থেকে বেশি দামে সোনালি মুরগি কিনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফরিদ আহমেদ। তিনি বলেন, সোনালি মুরগির দাম হঠাৎ করে এত বেড়ে গিয়ে ৩৮০ তে গিয়ে ঠেকবে, এটা অকল্পনীয়। তার মানে বুঝতে হবে বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য কেউ নেই। অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে যখন যেমন ইচ্ছা সেভাবে মুরগির দাম বাড়িয়ে দেবে, অথচ এগুলো দেখার কেউ নেই। গরুর মাংসের যে দাম, সেই কারণে তো সব সময় কেনা সম্ভব হয় না। এদিকে যে মুরগি কিনব, তারও উপায় নেই। কারণ প্রতিটি মুরগির দামই অতিরিক্ত বেড়েছে। এ কারণে আমরা সাধারণ ক্রেতারা জিম্মি হয়ে আছি। আমাদের পক্ষে কেউই নেই।
সব ধরনের মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে রামপুরা বাজারের বিক্রেতা খোরশেদ আলম বলেন, গত কিছুদিন যাবত সব ধরনের মুরগির দামই কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে। তবে, এখানে আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীদের কোনও হাত নেই। আমরা পাইকারি বাজার থেকে বাড়তি দামে কিনে এনে বাড়তি দামে খুচরা বাজারে বিক্রি করছি। অর্থাৎ আমাদের যেমন দামে কেনা পড়েছে, তেমন দামেই বিক্রি করছি।
তিনি বলেন, গত কিছুদিনের তীব্র গরমের কারণে মুরগির খামারিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক মুরগি মারা গেছে। এছাড়া, নানা কারণে মুরগির উৎপাদন খরচ বেড়েছে। গরমের কারণে মুরগির সরবরাহ অনেকটা কমে গিয়েছিল। সব মিলিয়ে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম বাজারে বাড়তি যাচ্ছে। অতিরিক্ত গরম শেষে মুরগির সরবরাহ যখন আবার বেশি হবে, তখনই ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম কমে আসবে।