মোহাম্মদ আলী : চাঁদ উঠুক বা নাইবা উঠুক আজ কামালের পরিবারে ঈদের দিন। কামালের হাতে আজ একটি নতুন অটোরিকশা। পকেটে অর্ধলক্ষ টাকা। চোখে সুখের স্বপ্ন। মনে এগিয়ে যাওয়ার বিশ্বাস। মাথা থেকে নেমে গেছে সকল দুঃশ্চিন্তার বোঝা। মুখে ফুটেছে আনন্দের হাসি!
রোববার, কামালের হাসির ঝলক দেখল জামালপুর শহরবসী। এদিন জামালপুর পৌরসভার মেয়র এর পরিবারের পক্ষ থেকে কামালের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় আড়াই লক্ষ টাকা মূল্যের একটি নতুন অটোরিকশা।
জানা যায়, গত ২৩ মার্চ বিকালে জামালপুর শহরের সড়ক ও জনপথ ভবনের সামনে থেকে একটি চোরাচক্র কৌশলে জামালপুর জেলার পাথালিয়া ( গুয়াবাড়িয়া) গ্রামের জামাল শেখের ছেলে কামাল শেখের একমাত্র অবলম্বন অটোরিকশাটি চুরি হয়ে যায়। যার নিবন্ধন নাম্বার জামালপুর পৌরসভার ৩১৫৩। থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর অনেক খুঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মিলে না।
ঈদের সময় দরিদ্র রিকশাচালকের এমন করুণ পরিনতির খবর প্রকাশ হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমে। রাতারাতি বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সমাজকর্মী ও সমাজসেবকদের। যার যার সামর্থ্য নিয়ে এগিয়ে আসে অনেকে। কিন্তু, তাতে অপূর্ণ থেকে যায় কামালের সমাধান। অবশেষে বিপদের কাণ্ডারি হয়ে এগিয়ে আসেন পাথালিয়ার কৃতি সন্তান, জামালপুর পৌরসভার মেয়র, আলহাজ্ব ছানোয়ার হোসেন ছানু ও তার দুই ভাই আনোয়ার হোসেন আনু এবং মাসুম। তারা তাদের পারিবারিক তহবিল থেকে আড়াই লাখ টাকা মূল্যের একটি নতুন অটোরিকশা কিনে তুলে দেন কামালের হাতে।
নতুন অটোরিকশা হাতে পেয়ে খুশীর ঝলক উঠে কামালের পরিবারের মুখে। কৃতজ্ঞতায় অশ্রুসিক্ত কামাল বলেন, এখন আমি উপার্যন করে খেতে পারব। আমার আর দুঃখ থাকবে না। আমার এ চরম দুঃসময়ে যাঁরা আমার পাশে দাঁড়ালেন আমি জীবন দিয়েও তাদের এঋণ আমি শোধ করতে পারব না। বিশেষ করে মেয়ের সাহেবের পরিবারের প্রতি আমি চিরঋণী থাকব।
এ ব্যাপারে মানবিক মেয়র খ্যাত, ছানোয়ার হোসেন ছানু বলেন, কামালকে পূণর্বাসন করতে পেরে আমাদের ভালো লেগেছে। কিন্তু, এমন ঘটনা যাতে আর কোনো রিকশাওয়ালার জীবনে না ঘটে সে ব্যাপারে চালক ও প্রশাসন উভয়কেই সচেষ্ট থাকতে হবে।