রৌমারীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব

Exif_JPEG_420

রৌমারী সংবাদদাতা : রৌমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ, সোনাভরি, হলহলি, জিঞ্জিরাম নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার ভেকু (এক্সিভিকেটর) দিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। বর্ষা মৌসুম ছাড়া সারা বছর প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করা হলেও রহস্যজনক কারনে প্রশাসন নিচ্ছে না কোন ব্যবস্থা। অবৈধ বালু উত্তোলনের কারনে হুমকিতে পড়তে হয় নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষের। এসব বালু ট্রাক্টর (কাকড়া) দিয়ে পরিবহন করায় নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি ও গ্রামীন রাস্তাঘাট। নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে শক্তিশালি একটি চক্র। এ কারনে স্থানীয়রা প্রকাশ্যে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ বলেন, এ অবৈধ বালু উত্তোলনে বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে পড়ে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এই অবৈধ বালূ উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। ব্রহ্মপুত্র নদ, সোনাভরি, হলহলি, জিঞ্জিরাম নদী থেকে প্রতিদিন ভেকু ও ড্রেজারে উত্তোলিত বালূ ১শত থেকে দেড়শত ট্রাক্টর (কাকড়া) গাড়ি বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। অবৈধ ও অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনে ব্রম্মপুত্র নদসহ অন্যান্য নদী গুলো ভাঙ্গনের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। ফলে বর্ষায় উক্ত এলাকা বন্যা ও নদীভাঙ্গন দেখা দেয়। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও অজ্ঞাত কারনে নেওয়া হচ্ছে না কোন আইনি ব্যবস্থা। ট্রাক্টর (কাকড়া) ও ভেকুর মালিক আজিজ, হারুন, চালক শাহিন, ফকির চাঁনসহ অনেকেই বলেন, রৌমারীতে প্রায় ৮০/ ৯০ টি ট্রাক্টর (কাকড়া) গাড়ি চলছে। এসব গাড়ি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বালুসহ মালামাল নেয়া হয়। বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদের জানান, বিভিন্ন উন্নয়নের ক্ষেত্রে বালুর প্রয়োজন। কিন্তু এমন নয় অবৈধভাবে বালূ উত্তোলন করে ক্ষতি করা হয়। এ বালু উত্তোলনের কারনে বর্ষার সময় নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে পড়ে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ। নদী থেকে অবৈধভাবে বালূ উত্তোলনের বিষয়ে ভেকু মালিক ও চালক রহম আলী, জাইদুল ইসলাম, শাহাজাহানসহ অনেকেই জানান, আমাদের ট্রাক্টর সমিতির সভাপতি সম্পাদকের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে বালূ উত্তোলন করা হচ্ছে। বন্দবেড় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকারকে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এলাকা উন্নয়নের স্বার্থে বালুর প্রয়োজন। তবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করলে নদীতীরবর্তী মানুষের ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পাবে না। হারিয়ে যাবে সহায় সম্বল। বালু উত্তোলন না করাটাই ভালো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান জানান, নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালূ উত্তোলনের বিষয়ে জানতে পেরেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে বন্ধের ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, অবৈধভাবে বালূ উত্তোলন বিষয়ে জানতে পেরেছি। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়েছে।