Thursday, May 2, 2024
Homeশেরপুরশেরপুরে আলোচিত মক্ষীরাণী রেখা গ্রেফতার

শেরপুরে আলোচিত মক্ষীরাণী রেখা গ্রেফতার

বুলবুল আহাম্মেদ : শেরপুর জেলার সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের নলবাইদ গ্রামের বহু আলোচিত মক্ষীরাণী মোছাঃ আছমা খাতুন ওরফে রেখা (৫২) কে গত রোববার রাত ৮ টার দিকে শেরপুর পৌরসভার গৌরীপুর কাজী বাড়ি মহল্লার তার ভাড়াটিয়া বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে শেরপুর সদর থানার পুলিশ। পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার নলবাইদ গ্রামের মোঃ রফিক শেখের স্ত্রী মোছাঃ আছমা খাতুন ওরফে রেখা দীর্ঘদিন ধরে তার গ্রামের বাড়িসহ শহরের বিভিন্ন মহল্লায় বাসা ভাড়া নিয়ে মেয়ে মানুষ সংগ্রহ করে দেহ ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপ করে আসছিল। এসব ঘটনার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে প্রলোভন ও ফাঁদে ফেলে তাদেরকে জিম্মি এবং ব্ল্যাক মেইল করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েও আসছিল বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে আছমা খাতুন ওরফে রেখার বিরুদ্ধে। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় রোববার রাতে মক্ষীরাণী রেখা শেরপুর পৌরসভার গৌরীপুর কাজী বাড়ি মহল্লার তার ভাড়াটিয়া বাসায় সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের তালুকপাড়া গ্রামের মৃত এলাই বক্সের ছেলে এরশাদ আলী (৩৮) ও চরশেরপুর ইউনিয়নের ধোপাঘাট গ্রামের মৃত মনর উদ্দিন মেম্বারের ছেলে শাহজাহান (৫৫) কে তার বাসায় কাজের কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাদেরকে মোছাঃ আছমা খাতুন রেখা, তার স্বামী মোঃ রফিক শেখ, তার ছেলে দিপু মিয়া, আঃ মান্নানের ছেলে মোঃ রাসেল, মোঃ রাজু মিয়া ও সাতানীপাড়া গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে মোঃ কালাম পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওই দুইজনকে মারধোর করে আটকে রাখে ওই বাসায়। এছাড়াও তাদের কাছে থাকা ২৫ হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। এদিকে ভিকটিম মোঃ এরশাদ আলী ও শাহ জাহানের পরিবারকে জানায়। পরে তারা জানতে পেরে সদর থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই দুই ভিকটিমদ্বয়কে উদ্ধার করে এবং সেই সাথে মক্ষীরাণী আছমা খাতুন ওরফে রেখাকে আটক করে সদর থানায় নিয়ে যায়। এদিকে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মক্ষীরাণী আছমা খাতুন ওরফে রেখার স্বামীসহ তার ছেলেরা পালিয়ে যায়। মক্ষীরাণী আছমা খাতুন ওরফে রেখার বিরুদ্ধে তার গ্রামের বাড়িসহ শেরপুর শহরে অসামাজিক কার্যকলাপের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। এঘটনায় শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এমদাদুল হক নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে মামলার তদন্তকারী অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খন্দকার সালেহ আবু নাইম বলেন, ২০০৮ সালে আছমা খাতুন রেখার বিরুদ্ধে এসব অপকর্মসহ একাধিক মামলা আদালতে বিদ্যমান ও বিচারাধীন রয়েছে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান। উল্লেখ্য ৩ বছরপূর্ব মক্ষীরাণী আছমা খাতুন সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের চর বাবনা গ্রামে তার স্বামী গৃহে থাকাবস্থায় বিভিন্ন স্থান থেকে দেহ পসারিণী সংগ্রহ করে তার স্বামী গৃহে অসামাজিক কার্যকলাপের দায়ে এলাকাবাসী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরের তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন এবং ওই এলাকা থেকে তাকে বিতারিত করে দেন। পরে সে শেরপুর জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে তার অভ্যাসগত অপরাধ ও অসামাজিক কার্যকলাপ অব্যাহত রাখেন বলে অভিযোগ উঠে। এছাড়াও সে তার ভাড়াটিয়া বাসায় যুবকসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষকে নারীর লোভ দেখিয়ে তার বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাদের ব্ল্যাক মেইল ও জিম্মি করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিতো এবং নারী নির্যাতন মামলার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় কারাবাস মক্ষীরাণী আছমা খাতুন রেখার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা। এছাড়াও তার গ্রেফতারের ও কারা বাসের ঘটনায় নলবাইদ গ্রামবাসীর মাঝে আনন্দ-উচ্ছ্বাস বইছে।

Most Popular

Recent Comments