প্রবাসী ভোটারদের ভোট গ্রহণের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে মতামত জমা দিল বিকল্পধারা বাংলাদেশ

সোমবার (১২ মে) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর প্রবাসী ভোটারদের ভোট গ্রহণের বিষয়ে মতামত প্রদান করে চিঠি দেন বিকল্পধারা বাংলাদেশ।বিকল্পধারার পক্ষ থেকে দলের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের সই করা চিঠি নির্বাচন কমিশনে হস্তান্তর করেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সহ-দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বুলু।
বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের নাগরিকদের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশন বেশ তৎপরতা দেখাচ্ছেন। বিষয়টি বিকল্পধারা বাংলাদেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিকল্পধারা বাংলাদেশ মনে করে, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের ভোটার অধিকার প্রয়োগের  বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া দরকার। প্রবাসে বসবাসকারী মানুষ যারা তাদের শ্রম ও মেধার মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশে প্রেরণ করে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় বিদেশে এবং দেশের অভ্যন্তরে তাদের নানা সমস্যার  সমাধানের ক্ষেত্রে এক ধরনের উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায়। যা মোটেও কাম্য নয়। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। ১০ শতাংশের বেশি ভোটার বিদেশে কর্মরত (উচ্চশিক্ষাসহ) আছেন। এই বিপুল সংখ্যক ভোটারের ভোট দিতে না পারা মানে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের পদ্ধতি কি হবে? যেহেতু বাংলাদেশের ভোটিং ব্যবস্থা এখনও সবার কাছে সমানভাবে গ্রহণযোগ্য করা যায়নি। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় – বিকল্পধারা বাংলাদেশের রিসার্চ ইউনিট ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সেই নির্বাচনে ৭৪টি আসনে (সুত্র: নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইট) ৯০ শতাংশের বেশি ভোট কাস্ট হয়েছিল। যেখানে ১০ শতাংশের বেশি ভোটার বিদেশে অবস্থানরত সেখানে একচতুর্থাংশ আসনে কিভাবে ৯০ শতাংশের উপরে ভোট কাস্ট হতে পারে!

বর্তমানে যেহেতু অন্তবর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন এবং তাঁদের সমানে বড় চ্যালেঞ্জ একটি সুষ্ঠু ও অবাধ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন উপহার দেয়া। যার অঙ্গীকার মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির কাছে বারবার উপস্থাপন করছেন। ১ কোটির উপর ভোটারের ভোট প্রদান নিশ্চিত করা মোটেও সহজ হবে না। সবচেয়ে বড় কথা কোন পদ্ধতিই বিতর্কের উর্দ্ধে রাখা যাবে না। কেননা আমাদের যথেষ্ট দক্ষ জনবল ও অভিজ্ঞতা কোনটাই নেই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অহেতুক বিতর্ক এড়াতে প্রবাসী ভোটারদের ভোট দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত না করা বর্তমান কমিশনের জন্য সমীচীন হবে। পরীক্ষামূলকভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পদ্ধতিগত প্রায়োগিক দিকগুলো ব্যবহার করে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি নিশ্চিত করা যেতে। মনে রাখতে হবে, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর নতুন নির্বাচিত সরকার গঠনে জাতীয় নির্বাচন যেন কোনভাবেই বিতর্কের সৃষ্টি না করে। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ দীর্ঘস্থায়ী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা চাই। আর এরজন্য চাই কার্যকর বিতর্কহীন নির্বাচন ব্যবস্থা।
কাজেই, বিকল্পধারা বাংলাদেশ এই অল্প সময়ে প্রবাসী ভোটারদের ভোট নিতে যেয়ে আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনকে আরও জটিল ও কষ্টসাধ্য না হয় তার অনুরোধ করছে। মনে রাখতে হবে, ভোট গ্রহণের বিষয়টি তাত্ত্বিক নয় প্রায়োগিক।