Thursday, May 2, 2024
Homeআন্তর্জাতিকবন্যায় বিপর্যস্ত আমিরাতে নাকাল জনজীবন-ফ্লাইট

বন্যায় বিপর্যস্ত আমিরাতে নাকাল জনজীবন-ফ্লাইট

রেকর্ড বর্ষণের জেরে বন্যায় বিপর্যস্ত সংযুক্ত আরব আমিরাত এখনও দুর্যোগের ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সড়কগুলো ডুবে যাওয়া এবং বিমান বন্দরের রানওয়েতে পানি ওঠায় জনজীবন ও ফ্লাইট শিডিউল পুরোপুরি জট পাকিয়ে গেছে।

গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মুষলধারে বর্ষণ হয় মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দেশটির আবহাওয়া দপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী, সোম-মঙ্গলবার রাতে পুরো আমিরাতে ২৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা গড়ে দেশটির দুই বছরের মোট বৃষ্টিপাতের সমান। গত ৭৫ বছরে এমন প্রবল বর্ষণ আমিরাতে দেখা যায়নি বলেও উল্লেখ করেছে আবহাওয়া দপ্তর।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ফুটেজ গুলোতে দেখা গেছে, রাজধানী আবুধাবি, বাণিজ্যিক কেন্দ্র দুবাই, শারজাহসহ বিভিন্ন অঞলের সড়ক পানিতে ডুবে গেছে, গ্যারেজ, দপ্তর এবং অ্যাপার্টমেন্ট-বাড়িঘর, শপিং মলগুলোর নিচ তলায় ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি।

চলাচলে অনুপযোগী হওয়ায় আমিরাতের অধিকাংশ সড়ক ও হাইওয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের বিশৃঙ্খল অবস্থা এখনও কাটেনি। বৃষ্টি পরবর্তী দুবাইয়ের যেসব ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, সেগুলোতে দেখা যাচ্ছে— রাস্তাগুলোতে কোমর সমান পানিতে ডুবে আছে বাস ও গাড়িগুলো।

ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টিতে রানওয়েতে পানি ঢুকে যাওয়ায় বুধবার পর্যন্ত অধিকাংশ বিমানবন্দর থেকে কোনো ফ্লাইট পরিচালনা করা যায়নি। বৃহস্পতিবার থেকে সীমিত আকারে শুরু হয়েছে ফ্লাইট পরিষেবা।

সেই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সড়ক-মহাসড়কও চলাচলের উপযোগী করতে কাজ শুরু করেছে আমিরাতের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর। সেসব সড়কে জমে থাকা পানি সরাতে ওয়াটার পাম্প ব্যবহার করছেন দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা।

গত রোববার উপসাগরীয় অঞ্চলের অপর দেশ ওমানে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। ব্যাপক এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশটিতে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার পরের দিন সোমবার রাত থেকে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয় আমিরাতে।

দুবাইয়ের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক (এমিরেত) সরকার এক নির্দেশনায় সড়ক থেকে পানি না সরা পর্যন্ত চাকরিজীবী এবং শিক্ষার্থীদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে জরুরি পরিষেবা কর্মীদের এই নির্দেশনার বাইরে রাখা হয়েছে।

আমিরাতের জনগণ ব্যাপকভাবে ইন্টারনেট ও অনলাইন পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল। বৃষ্টির কারণে এই পরিষেবা ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। আজ বৃহস্পতিবার থেকে ফের স্বাভাবিক হওয়া শুরু হয়েছে ইন্টারনেট-অনলাইন।  

মধ্যপ্রাচ্যের মরু আবহাওয়ার দেশ আমিরাতে বছরের অধিকাংশ সময়ে আবহাওয়া গরম ও শুষ্ক থাকে। গ্রীষ্মকালে দেশটিতে তাপামাত্রার পারদ অনেক সময় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্তও ওঠে। সেখানে সোম-মঙ্গলবার রাতে যে পরিমাণ বর্ষণ হয়েছে, তা দেশটির জলবায়ুর ইতিহাসে বিরল ঘটনা।

আমিরাতের জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি এই দুর্যোগের প্রধান কারণ।

সূত্র : রয়টার্স

Most Popular

Recent Comments