আসমাউল আসিফ : জামালপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্সে প্রবেশকে কেন্দ্র করে দুই গ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার বিকেলে শহরের দেওয়ানপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
গতকাল শনিবার ৩১ আগষ্ট বিকেলে শহরের দেওয়ানপাড়া এলাকায় সৈয়দ আলী মন্ডল কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে জেলা বিএনপির সীমিত সংখ্যক নেতাদের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ভিডিও কনফারেন্স শুরুর আগে থেকেই সেখানে দলীয় নেতকর্মী উপস্থিত হন। ভিডিও কনফারেন্স শুরুর কিছুক্ষণ আগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক মহিলা এমপি নিলুফার চৌধুরী মনির নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা কমিউনিটি সেন্টারে প্রবেশ করতে গেলে আসন না থাকায় তাকে বাধা দেয়া হয়। এ সময় আগে থেকেই বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো: ওয়ারেছ আলী মামুন সেখানে অবস্থান করছিলেন। নিলুফার চৌধুরী মনি তার নেতাকর্মীদের নিয়ে জোরপূর্বক প্রবেশ করতে গেলে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। এর এক পর্যায়ে কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে দেওয়ানপাড়া মোড় ও ফৌজদারী মোড় এলাকায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো: ওয়ারেছ আলী মামুনের কর্মী-সমর্থকদের সাথে বিএনপি নেত্রী নিলুফার চৌধুরী মনির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টাÑধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় কমিউনিটি সেন্টার, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের ব্যাক্তিগত গাড়ী ভাঙচুর ও ফৌজদারী মোড়ে পাঁচটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে শাকিল লষ্কর (৪০), সাগর (২৪), রাশেদুজ্জামান (৪২), শাহেদ মির্জা (৪২), আমজাদ (৩৬), নুরুল ইসলাম (৬৬) কে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো: ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স আয়োজন করা হয়। সেখানে জেলা বিএনপি, উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সীমিত সংখ্যক নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে ভিডিও কনফারেন্স শুরুর দশ মিনিট আগে জামালপুরের একজন কেন্দ্রীয় নেত্রী ও অপর কেন্দ্রীয় নেতা যারা ঢাকায় অবস্থান করেন তারা ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি গ্র“প নিয়ে সেখানে প্রবেশের চেষ্টা করেন। সুনির্দিষ্ট ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে এই অনুষ্ঠান তাই সকলের প্রবেশের সুযোগ নেই বলে তাদের অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তারা অনুরোধ উপেক্ষা করে বিশৃঙ্খলা করে কমিউনিটি সেন্টার ও কিছু গাড়ি ভাঙচুর করে।
এ প্রসঙ্গে নিলুফার চৌধুরী মনি বলেন, জেলা বিএনপি যদি সুষ্ঠুভাবে ক্রাইটেরিয়া করত আমাদের ছেলেরা যেতে পারত। তারা অন্যায়ভাবে, অগণতান্ত্রিকাভাবে ক্রাইটেরিয়া করেছে এতে যারা ত্যাগী, গত ১৭ বছর জেল-জুলুম সহ্য করেছে তারা যেতে পারেনি।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, একটি অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ায় পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পৌছায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। কোন পক্ষ থেকেই অভিযোগ পাইনি, সংশ্লিষ্ট পক্ষের কাছে শুনে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করব।